Kobita Lyrics in Bengali | Best Bengali Poetry

Sharing Is Caring:

Poetry of Sumita Choudhury

Kobita Lyrics in Bengali | Read Online Bangla Kobita

বৈষম্যের বড়দিন

শীতের অলিন্দে বড়দিনের পসরা সাজে,
কুয়াশার আদরে ছুটি নেয় শহুরে ব্যস্ততা,
ফেরারি পথের টান যেন হাতছানি দেয় মনকে,
উষ্ণ রোদের পশমিনায় ফেরে সফরের বার্তা।

কেক-কুকিজের ঘ্রাণে মায়াবী আবেশ
প্রভু যিশু আগমনের খবর দিয়ে যায়,
সেজে ওঠে গির্জা আলোকমালার সাজে,
এক উৎসবের সার্বিক আয়োজনে মত্ত সবাই।

তবু ফুটপাথগুলো রয়ে যায় নিত্য উপোসী,
করাল শীতের দুর্বিনীত থাবায় চির ত্রস্ত,
সবটুকু আলোর মাঝেও তমসার গল্প যেন,
যাপনের উদলা উঠোনে জীবন সেখানে বিধ্বস্ত।

উৎসব আসে যায়, দিনের দৈর্ঘ্য কমে বাড়ে,
বড়দিন পালিত হয় যিশুর মহিমায়।
সামাজিক বৈষম্য ক্রমেই বাড়ে আড়ে-বহরে,
মন বড়ো হয় না, হয়নি আজও, স্বার্থসুখের সংকীর্ণতায়!!

নিখোঁজ শৈশব

শিশুদিবস আসে যায়
ফুটপাথগুলো সে খবরের মর্ম বোঝে না।
ওদের জীবন সংগ্রামে শিশুও রুজির সরঞ্জাম,
আজন্ম যাপনে কোনো শৈশব থাকে না।

একদিনের উৎসবে কত না প্রতিশ্রুতি,
রোজনামচার বন্যায় নিখোঁজ হয় সবই!
সস্তার শিশুশ্রমিকের দেদার চাহিদায়,
দারিদ্র্য ভাতের গন্ধে, শৈশব বলি দেয় রোজই।

“সর্বশিক্ষা অভিযান” দেওয়ালে পোস্টার সাঁটে,
তারই পাশ ঘেঁষে এঁটো বাসনে ব্যস্ত কচি হাত।
কখনো বা ক্ষতবিক্ষত কয়লা থেকে ইটের চুম্বনে,
অর্থবানের ঘরেই শৈশব বই হাতে বজায় রাখে জাত।

একবিংশ শতাব্দীর এ রোজনামচা বৃহত্তম বিশ্বের,
ক্ষুধার সূচকে প্রথম হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা রোজ।
জন্মহারের থেকে মৃত্যুহারের পাল্লা ভারি,
বাকিরা বাঁচলেও, বিলাসিতার শৈশব সেখানে নিখোঁজ!!

নিরাবরণ প্রশ্নেরা

প্রশ্নগুলো খামবন্দী এ যাবৎ মনে
যুগান্তরের ধুলো মাখছিল শুধুই,
এক অশনি ঝড়ে হাটখোলা হলো পথ
মলিনতা ঝেড়ে আছড়ে পড়ল আপন তীক্ষ্ণতায়।

গলি থেকে রাজপথ অবিরাম প্রশ্নদের ঝড়ে কাঁপে,
বয়সের হিসাবের খাতা লোপাট হয়েছে আজ,
যাবতীয় ভয়কে গুমঘরে করে বন্দী
প্রশ্নগুলো অকপটে নিরাবরণ পথ হাঁটে।

নখ দাঁতের আঁচড়কে আর নেই তার কোনো ভয়,
তাচ্ছিল্যের হাসিতে সেসকলই যেন ঝরা পাতারই মতো।
দুঃসাহসী বর্মকে ভেদ করতে পারে না এতোটুকু,
উপহাসের বলি হয় তাই সর্বত্র প্রতিপলে।

তবুও কিছু সরীসৃপ আজও শীতঘুমে
পূতিগন্ধময় পরিবেশেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বাঁচে!
আস্তাকুঁড় হাতড়ায় সুখ চাবির খোঁজে,
শেষ ঠিকানায় পড়ে থাকে সেখানেই জঞ্জালের মতো।

হাওয়ায় হাওয়ায় বিষাক্ত বিষের দাপট
যেন মৃত্যু গহ্বরে বন্দী করতে চায় আজীবনের প্রশ্নদের,
আপন করাল জিহ্বায় তাকে করে পান নীলকণ্ঠ সাজে তারা,
শাণিত তরবারিতে ফালা ফালা করে রাত সব এক নতুন ভোরকে করতে আলিঙ্গন।।

নারী স্বাধীনতার খোঁজে

আজও স্বাধীনতা খোঁজে নারী
রাত দখলের প্রতি-স্পর্ধায়!
একবিংশ শতাব্দীতেও শৃঙ্খল পদে পদে
তার উড়ান রদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায়!

আজও ফতোয়া হাঁকে সমাজ
তাঁর মৌলিক অধিকারে!
বিচারের নামে চলে প্রহসন
নগ্ন ক্ষমতার অহংকারে!

পিতৃতন্ত্রের খোলা হাটে
নারী আজও পণ্য,
সেই নারীই দুর্গা কালি রূপে
দেবালয়ে অগ্রগণ্য!

যুগে যুগে নারী তুলেছে অস্ত্র
স্বাধিকারের দাবিতে,
ঝাঁসী থেকে বাংলায় জ্বলেছে মশাল
স্বাধীনতার লড়াইয়ে মেতে।

গার্গী মৈত্রেয়ী মাতৃতন্ত্র কালে
দিয়েছিলেন বিদ্যার পাঠ,
আজ পিতৃতন্ত্রের ঘৃণ্য থাবায়
সেই শিক্ষাই হয়েছে লোপাট।

আরো একবার জাগো নারী
ভাঙো শৃঙ্খল যতো,
স্বাধিকারের লড়াইয়ে হও আগুয়ান
সদর্পে অবিরত।।

এলোমেলো ভাবনারা

ভাবনাগুলো এলোমেলো
অদৃশ্য রেখাপটে,
জুড়ছে ভাঙছে সরলরেখা
সময়ের বালুতটে।

ইচ্ছেখাতার আলপনারা
আগামীর দিন গোনে,
কাটা ঘুড়ির ছেঁড়া সুতোয়
নতুন স্বপ্ন বোনে।

স্বপ্ন নদীর খেয়া মাঝি
বড়োই পথ ভোলা,
আবেগী স্রোতে দাঁড় বাইতে
হারায় পুঁজির ঝোলা।

রাত-বিরেতে জোনাকি আলোয়
ইতি-উতি পাখা মেলে,
রামধনুরই সাত রঙে মেশে
লক্ষণরেখা অবহেলে।

পথিকের সাথে পথেরই ভিড়ে
তারা গল্প লেখে কত,
সময়ের কাঁটায় ঝরিয়ে রক্ত
তবু গোলাপ ফোটায় শত।।

আমরি বাংলা ভাষা

প্রথম ফোটা আধোবোলে,
বাংলা তোমারেই নিয়েছি বক্ষে তুলে।
তোমারই হাত ধরে প্রথম অক্ষর পরিচয়,
তোমাতেই দিতে পাঠ বিদ্যাসাগর রচেছিলেন বর্ণ পরিচয়।
শিশুকালের কবিগুরুর লেখা মধুর সহজপাঠ,
যার হাত ধরে পেরিয়েছিলাম মোরা বিদ্যালয়ের প্রথম ধাপ।
তোমারই কিশলয়ে মুকুলিত হয়েছিল সকল নব কুঁড়ি,
তুমিই যে মাতৃভাষা মোদের, স্বপ্ন, আশা, গরব সবাকারই।
তোমাতেই মোরা কাঁদি হাসি, তোমাতেই গান গাই,
তোমাতেই মোদের সকল অনুভূতির পরশরে খুঁজে পাই।
বাংলা তোমার মিঠে বোলে বাউল গায় গান,
অগণিত কবি, লেখক, সাহিত্যিক তোমারই বরদান।
বিশ্ব দরবারে আজ তুমি চর্চিত, সমাদৃত,
সাহিত্যাঙ্গনে তোমার আসন সর্বাগ্রে পূজিত।
অগণিত শহীদ ভাইদের জানাই শতকোটি প্রণাম,
যারা তোমার তরে দিয়েছিলেন অকাতরে বলিদান।
বাংলা তুমি মোদের আত্মা, মোদের স্বাভিমান,
তোমার সাথেই জুড়ে আছে মোদের নাড়ির টান।।

আর্জি

ডিগ্রিধারীর মেলার মাঝে
আসল মানুষ কই?
বিদ্যালাভের কারখানায় আজ
শিক্ষার দাম নেই!
পুঁথির বিদ্যা শুধুই যে আজ
গালভরা রসিকতা,
নবীশের মনে নেই তার দাম,
নেই কোনো ভালোবাসা!
শিক্ষাগারও হয়েছে যে কল,
শিক্ষার্থী কলের পুতুল।
মন মগজে চাপিয়ে বোঝা,
হারিয়েছে শিক্ষার দু-কূল।
শিক্ষা আজ রঙিন ফানুস
কাগজের ফুল যেন,
বর্ণ-গন্ধ-রূপ হারিয়ে,
আবর্জনা এ হেন!
মাগো তোমার পূজায়
আর্জি আমার আজ,
বিদ্যাকে ফের শিক্ষার,
পরাও তুমি তাজ।
মনের শিক্ষায় শিক্ষিত কর,
মান-হুঁশ দাও তাতে।
মন-মগজের আবর্জনা,
দূর করো শিক্ষার আলোতে।।

এসেছে মধুমাস

পলাশ শিমুল কৃষ্ণচূড়ায় সেজে এসেছে আবার বসন্ত,
দখিনা পবনে আবার উঠেছে মন কেমনের ডাক,
বাউল বাতাস ডাকছে ইশারায় আনমনে দূরে কোথাও,
উদাসী দুপুরে যেন বেখেয়ালী হওয়ার আমন্ত্রণ।
কুহুকুহু রবে কোকিল খুঁজে ফেরে তার পিয়াকে,
তার একটানা আবেগী স্বর যেন মনকে অবশ করে।
মনও ভেসে চলে যায় দূরে কোথাও সেই বার্তায়,
আপন মনের মানুষের ঠিকানার খোঁজে।

এলোমেলো মাতাল হাওয়ায় ভাসছে মাদলের বোল,
দূরে কোথাও বাজছে বংশীধারীর বাঁশির ধুন,
অলিরা হয়েছে মাতাল মধুর আবেশে,
মনেতেও লেগেছে জোয়ার প্রেমের বার্তায়।
ফাগুন এসেছে বসন্তের দ্বারে ভরা যৌবনের সাজে,
ফাগের লালিমায় রেঙেছে তাই প্রকৃতি।
এ মধুমাসে কোনো কাজেই লাগে না যে মন,
মনফাগুন যেন প্রেম পিয়াসে সুর তোলে বেলোয়ারি।
কখন যেন অস্তরাগে রাঙা সাঁঝ আসে চুপিসারে,
সলাজ বধূর ঘোমটাখানি মুখের ‘পরে টেনে।
রাত বিছায় তারাদের চাঁদোয়া আসমানে,
মধুরাতে চাঁদ নামে রূপোলি মেখলা জড়িয়ে, প্রেমের বাসরে।
উতলা হয় রাধা শ্যামের অভিসারে যাওয়ার তরে,
চলার পথে রাতের নীরবতা ভাঙে পায়ের নূপুর।
শ্যামও অধীর হয় প্রিয়া মিলনের সেই ক্ষণে,
বসন্ত প্রেম সাজে সদর্পে আপন মহিমায়।।

মনঋতু

প্রকৃতির নিয়মে ঋতু পরিবর্তন হয়,
তবে মন কি সর্বদা তার পরশ পায়?
রাঙা বধূ বেশে বসন্ত আসে প্রতিবার,
তবু সবার জীবন কি রাঙাতে পারে তার ফাগের বাহার?
কিছু বসন্ত হয় বিবর্ণ মৌন বিধুর
পাতা ঝরানোর দেশে, যেন শীর্ণ, করুণ, কাতর,
শীতের রুক্ষতা লেগে থাকে তার গায়ে,
যেন কুয়াশার মলিন চাদর রয়েছে জড়ায়ে।
মন অঙ্গনে ফোটে না কোনো শিমূল, পলাশ বা কৃষ্ণচূড়া,
প্রকৃতিও সেথা বিরহী বিধুর, পরে না প্রেমের ধড়াচূড়া।
বয় না দখিনা পবন মহুয়ার গন্ধ মেখে,
বাজে না মাদলের বোল ভালোবাসার পরশ রেখে।
ফাগের রঙও সেথা বড়োই ফিকে, ধূসর, বিবর্ণ,
বধূ বেশ সেথা ধূলিতে লুটায়, বসন্ত হয় সেথা গৌণ।
মনঘরই নির্ধারণ করে জীবনে ঋতুর আসা যাওয়া,
কখনো বসন্তেও আসে রুক্ষ শীত, কভু বা খর গ্রীষ্মেও বয় মধুর দখিনা হাওয়া।।

প্রেমের উৎযাপন

প্রেমের কি নির্দিষ্ট দিনক্ষণ থাকে?
প্রেম যে হয় রোজ।
প্রেমের ফাঁদ পাতা এ ভুবনে,
কেউ কি রাখে তার খোঁজ?
প্রেম যে স্বতঃস্ফূর্ত এক অনুভূতি,
দুটি হৃদয়ের মিলন,
অন্তরাত্মায় চিরবসন্ত,
মনের ঘরে সাধন।
কিছু প্রেম পায় সামাজিক তকমা,
কিছু প্রেম থাকে নিরুত্তর,
কিছু বা নীরবে ঝরে অকালেই,
ইতিহাসের পাতায় রেখে নিজ সাক্ষর।
মানবজন্মের লগ্ন থেকেই
প্রেমের অস্তিত্ব,
মানবসভ্যতার অগ্রগতির সাথে
বেড়েছে তার কর্তৃত্ব।
হাজার উপহারে, উপঢৌকনে,
যায় না তারে ধরা।
বন্ধনহীন, মনজমিনেই
প্রেমের ভিত যে গড়া।
মন আঙিনায় বিরাজ করুক
প্রেমের চিরবসন্ত,
প্রেমের উৎযাপন হোক রোজ,
ভালোবাসা হোক প্রাণবন্ত।।

নগ্ন ভারত-মা

আমার ভারত আজ কলঙ্কিত, নগ্ন, ধর্ষিতা,
দ্রৌপদীরা আজ নিত্য হয় খোলা হাটে লাঞ্ছিতা।
আজ অহল্যারা চায় না আপন জীবনের কামনায় রামের পাদস্পর্শ আর,
তাঁরা আপন প্রস্তর জীবনকেই চোখের জলে করেছে স্বীকার!

দিকে দিকে আজ ধর্মের ধ্বজা হাতে চলেছে নরপিশাচদের উল্লাস,
যাদের হাতে কবেই ধর্ম হনন হয়ে, হয়েছে আজ এক পচাগলা লাশ।
ক্ষমতার পাশার দানে সেখানে হয় নিত্যই বস্ত্রহরণের মহোৎসব,
সেখানে নারীরা কেবলই ভোগ্য পণ্য স্বরূপ, রক্ত-মাংসের এক অবয়ব।

মননে-চেতনে যে সংস্কৃতি ধারণ করা হয়, সেই তো ধর্ম,
আজ অপসংস্কৃতিকে বরে, বকধার্মিকেরা পরেছে অধর্মেরই বর্ম।
ভারতভূমে যাঁদের আদিবাস, যাঁরা এদেশের আসল ভূমিপুত্র,
তাঁদেরই উৎখাতে, শাসন-শোষণের ফর্মাণ হাতে নেমেছে রাজপথে, সভ্যতার পরিপন্থী একদল হিংস্র- বর্বর শত্রু।

তেরঙা আজ হননের রক্তে কলুষিত, বর্ণহীন,
ভারতমা আজ বিবস্ত্র, ক্ষয়িষ্ণু, সংজ্ঞাহীন।
স্বরাজের মুকুট হারিয়ে আজ কাঁটার মুকুটে সে ক্ষত-বিক্ষত,
আপন সন্তানদের দেওয়া পরাধীনতার শৃঙ্খলে সে আজ সর্বত্র ধিকৃত!

হায়রে কামুক, যে যোনিতে জন্ম তোমার, তাকেই আজ করো গণধর্ষণ!
যে স্তনসুধা পানে বাড়বৃদ্ধি, তাকেই অশ্লীলতায় করছো আপন কাম বর্ষণ!
আরাধ্যা দেবীরাও তাই আজ, আপন সিংহাসন ছেড়ে নিয়েছে নির্বাসন,
দেখে, ধর্মের নামে নিত্য অধর্মের এই অকথ্য মিথ্যাভাষণ।

জাগো মনোরমা, আরেকবার আপন নগ্নরূপের নির্মম সত্তায়,
দেখাও এ ঘৃণ্য সমাজের কদর্য রূপ, আপন আদলের আয়নায়।
চিরনিদ্রা ছেড়ে জেগে ওঠো চিত্রাঙ্গদা, আপন ভূমিকে রক্ষার রণহুঙ্কারে,
জাগাও আপনা মাঝে দনুজদলনীকে, আপন ভারতভূমি রক্ষার দায়ভারে।।

[Read More] [Kobita Lyrics in Bengali] [Most Popular Kobita Lyrics in Bengali]

স্বাধীনতা দিবস

সমগ্র ভারতবাসীর প্রাণের উৎসব স্বাধীনতা দিবস।
শত সহস্র বিপ্লবীর রক্তে রাঙা এই স্বাধীনতা দিবস।
ভারতের গৌরবের বার্তা বহ এই স্বাধীনতা দিবস।
শহীদ বীরদের স্মরণের দিন এই স্বাধীনতা দিবস।
লালকেল্লা থেকে পাড়া, তিরঙ্গার বরণ, এই স্বাধীনতা দিবস।
আট থেকে আশির স্যালুট জানানোর দিন এই স্বাধীনতা দিবস।
কচি কাঁচাদের প্যারেড,
সেনাদের গান স্যালুট,
দেশাত্মবোধক গান,
নতুন পতাকায় টান,
তবু থাকছে কি দেশের মান?
ভারত মা কি পায় তার সম্মান?
শাসন যখন শোষণ আর স্বাধীনতা যখন স্বেচ্ছাচারিতা,
সত্যি কি তাতে থাকে কভু কোনো স্বাধীনতা?
আমরা কি জানি, বুঝি, শহীদদের বলিদান?
সত্যি কি স্বাধীনতা পায় তার গৌরব সম্মান?

একটা জাতীয় ছুটি,
ফিস্টের মাংস রুটি,
নেতাদের সাদা পাঞ্জাবী,
স্বাধীনতা পালনের দাবি,
এই বুঝি স্বাধীনতা?
কাঁদে ভারত মাতা!
পর শৃঙ্খলে বদ্ধ ছিল যে, মানত যে বশ্যতা,
সে আজও শৃঙ্খলে বদ্ধ, নিজদেশে নিজভূমে!
বিশৃঙ্খল অরাজকতার শৃঙ্খল যে তাকে চুমে।
স্বাধীনতা আজ হারিয়েছে তার অর্জিত মান- গৌরব,
বীর সেনাদের মাথা নত আজ, হারিয়েছে তারা মান,
আর একবার জেগে ওঠো আজ ভারতের যুব সমাজ,
দাও ঘুচায়ে ভারতমাতার সব শৃঙ্খল, লাজ,
ফেরাও তার নিজ তাজ।।

স্বাধীনতার অর্থ

স্বাধীনতা মানে স্বাধিকার, স্বশাসন, স্বরাজ,
সকল শৃঙ্খলের থেকে মুক্তি।
স্বাধীনতা নয়তো শুধু একটি দিবস উৎযাপন,
এক অলিখিত চুক্তি।
স্বাধীনতা তো তোমার আমার,
স্বাধীনতা সবাকার।
দৈনন্দিন জীবন মাঝে আনন্দ-উৎসব,
একসাথে বাঁচার অঙ্গীকার।
যেখানে থাকে না কোনো বেড়াজাল,
বিভেদ বৈষম্য দ্বন্দ্ব,
থাকে না শাসনে-শোষণের রক্তচক্ষু,
বিদ্বেষের রক্তের কটু গন্ধ।
স্বাধীনতা মানে খোলা আকাশ, বাতাস,
এক আলোর সামিয়ানা।
স্বাধীনতা নয়তো হত্যা, লাশের ঢের,
আর মৃত্যুর পরোয়ানা।
স্বাধীনতা নিজ দেশে সবার সমানাধিকার,
দেশপ্রেম,আবেগ, উচ্ছ্বাস।
স্বাধীনতা নয়তো স্বৈরাচারিতা,
ক্ষমতার দম্ভের পৈশাচিক উল্লাস।
যেখানে মানবতা পদানত, শৃঙ্খলিত,
ক্ষমতার দাসানুদাস,
সেখানে স্বাধীনতা হারায় তার আপন মান,
পড়ে থাকে তার দগ্ধ, নগ্ন লাশ।।

গণবিপ্লব “হুল”= ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম

আঠারোশো পঞ্চান্নর তিরিশে জুন, সিধো, কানহোর নেতৃত্বে,
এক দুঃসাহসিক অসম যুদ্ধের সাক্ষী ছিল সাহেবগঞ্জের ভাগনাদিহি মাঠ।
একই পরিবারের ছয়জন দুঃসাহসী বীরের নেতৃত্বে সংগঠিত লড়াইয়ের সাক্ষী আছে আজও ইতিহাস,
সিধো, কানহো, বীরসা, চাঁদ, ভৈরব, ফুলমণি ও ঝানু মুর্মুর এ এক বীরগাথা।

সঙ্ঘবদ্ধ করে দশ হাজার আদিবাসী সাঁওতালদের,
সংগঠিত হয়েছিল “হুল”(বিদ্রোহ) তথা ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম।
ইংরেজের ভূমিকরের অপশাসন ও নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে,
তারই সাথে তদানীন্তন জমিদার ও মহাজন-শ্রেণীর বর্বরোচিত জুলুমের বিরুদ্ধে,
জেগে উঠেছিল স্বঘোষিত বিপ্লব আপন স্বাধিকারের দাবিতে।
যোগ দিয়েছিল নারীরাও, ফুলমণি ও ঝানু মুর্মুর হাত ধরে।

“হুল” “হুল” রবে কেঁপে উঠেছিল মেদিনী, কেঁপেছিল ইংরেজ শাসকের বুকও।
সেই প্রথম ঐতিহাসিক গনপদযাত্রার সূচনা হয়েছিল সেইদিন,
ছড়িয়ে পড়েছিল ক্রমেই বিহার পেরিয়ে বাংলার পুরুলিয়ায়ও,
ক্রমেই ভারে-বহরে বৃদ্ধি পাচ্ছিল তার আঁচ।

প্রায় তিরিশ হাজার সাঁওতাল জনজাতির এ হেন বিদ্রোহে প্রাথমিকভাবে পিছু হঠেছিল ইংরেজ বাহিনীও,
গুলি বারুদের বিরুদ্ধে তীর ধনুকের এই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চলেছিল দীর্ঘ আট মাস।
প্রাণ গিয়েছিল সহস্রাধিক আদিবাসীর, ধর্ষিতা হয়েছিল না জানি কত শত নারী।

এই বিদ্রোহের প্রারম্ভ কাল যদিও সতেরশো আশি,
সাঁওতাল জননেতা তিলকা মুর্মু তথা তিলকা মাঞ্জহীর নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে।
তখনই গণসংগ্রামে সোচ্চার হয়েছিল সাঁওতাল জনজাতি,
গর্জে উঠেছিল শাসক ও সামন্তশ্রেণীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে।

সেই ধিকি ধিকি জ্বলা আগুনেই বিপ্লবের মশাল জ্বালিয়েছিল সিধোরা,
তুলে নিয়েছিল অস্ত্র আপন অধিকারের দাবিতে।
ধ্বংস করেছিল বীরভূমের কুখ্যাত নাগপুর বাজার, যেখানে পণ্যের পরিবর্তে লোটা হত তাদের,
হত্যা করেছিল উনিশ জন বিপক্ষের শত্রুকে পাঁচকাঠিয়ায়, বিদ্রোহের আগুনকে লেলিহান করে।

যদিও অসম যুদ্ধে, বিশ্বাসঘাতক ইংরেজ তাঁবেদারদের সাহায্যে নিহত হয়েছিল সিধো,
গ্রেপ্তার হয়ে, ফাঁসির মঞ্চে বীর দর্পে প্রাণ দিয়েছিল কানহো,
বর্বরোচিত অত্যাচার ও গণধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত হয়েছিল ফুলমণি,
তবু রেখে গেছিল তারা সাক্ষর, আপন স্বাধিকারের দাবিতে প্রথম গণবিপ্লবের, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে।।

কার্গিল বিজয় দিবস

সেদিনের প্রথম সূর্যকিরণ জানিয়েছিল সাদরে অভিবাদন,
টাইগার হিলে উড়েছিল যেদিন ভারতের বিজয় কেতন।
ষাট দিনের এক দুঃসাহসিক রক্তক্ষয়ি যুদ্ধের হয়েছিল সমাপ্তি,
প্রতিকূল পরিবেশে, সকল প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, সে ছিল এক বিশাল জয়ের ব্যাপ্তি।

পাঁচশো সাতাশ জন বীর শহীদ আর চোদ্দোশো আহত সৈনিক,
কার্গিল যুদ্ধের বিজয় গাথা লিখেছিল, উনিশশো নিরানব্বইয়ের ছাব্বিশে জুলাইয়ের দৈনিক।
হিমশীতল রাত দেখেছিল তাঁদের, সুনিপুণ রণকৌশলের অসীম সাহসিকতা,
দেশের জন্য অতন্দ্র প্রহরায়, শত্রু উৎখাতে, তাঁদের ইস্পাতসম দৃঢ় মানসিকতা।

দেখো কার্গিল বিজয় দিবস দিচ্ছে আবার সগৌরবে ডাক,
বলছে হেঁকে, “প্রতি ভারতবাসীর বুকে, স্বাধীনতা মান পাক।”
বলছে আরো, “ভুলো না যেন, বীর শহীদদের বলিদান,
সোচ্চারে গাও, ঐকতানের সুরে, বিজয় দিবসের জয়গান।”

তুমি আমি যখন তন্দ্রাবিভোরে আজও দেখি সুখ-স্বপন,
তখন প্রতিটি সীমান্তে, অতন্দ্র প্রহরায় শত-সহস্র বীর জওয়ান করে চলে কৃচ্ছ্রসাধন।
প্রতিনিয়ত, প্রতি পলে নেওয়া, তাঁদের বেপরোয়া প্রাণের ঝুঁকি,
এনে দেয় আমাদের জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য, না রেখে কোনো ত্রুটি।

এসো আজ এই বিজয় দিবসে আমরাও নিই শপথ,
স্বদেশের স্বাধীনতার মান রক্ষায়, করি না চয়ন যেন বিপথ।
একতার সুরে এসো আজীবন সবাই, আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,
তবেই স্বাধীনতার এই সোনালি সূর্য, দেবে না কখনো ফাঁকি।।

অকাল বসন্ত

কোন পরশে ফুটল যেন অধরের গোলাপ,
রক্তিম রাগে রাঙল শুষ্ক বেশ ছেড়ে।
অকালেই দেখা দিল বসন্ত,
বেখেয়ালি এক মাতাল সময়ের ফেরে।

তীর তীর করে কাঁপা ঠোঁটে
এক ঝিম ধরা নেশার ব্যথা,
মন জুড়ে উথাল-পাথাল ঢেউয়ে,
জুড়ছে-ভাঙছে কত অনুভবের কথকতা।

চুম্বনের মধুর রেশে
প্রেম ভেঙেছে সব আগল,
কায়া-মন জুড়ে বিরাজিত বিবশতা,
যেন বহু যুগ পর ভালোবাসা খুলেছে তার শৃঙ্খল।

হার মানছে মহুয়ার নেশায় মাতাল রাত,
মন জুড়ে উঠেছে মাদলের দ্রিমি দ্রিমি।
ঘোর লাগা চোখে না বলা কথার ভিড়,
বলছে স্বলাজে ভালোবাসাকে নাও চিনি।

রোদেলা দুপুরে জ্যোৎস্না রাতের আবেশ,
অনুভূতি গলা প্রেম চুঁইছে যেন।
ফেরারি বাতাসে বেদুইনের ডাক,
ঘরছাড়া হতে আহ্বান এ হেন।

ঘর বাঁধল এভাবেই দুটি মন,
ভালোবাসার পরশ রেণু মেখে।
জীবন দরিয়ায় ভাসল প্রেমের তরী,
মন আঙিনায় ফাগুনের ফাগ চেখে।।

স্মৃতির উজান পথে

মনঘরে আজ সহসা জলতরঙ্গের রেশ,
কতো কথার কোলাজের মধুর আবেশ।
মনমাঝি নাও ভাসিয়েছে স্মৃতির উজানে,
বেহিসাবি ফেরারি হাওয়ার অমোঘ টানে।

ক্যানভাসে ফুটছে অবয়ব রঙের প্রলেপে,
মন আঙিনায় বসন্তের আবীরে লেপে।
কুহুতানে মাতাল হয়েছে মন প্রকৃতি,
ভালোবেসে কাঙাল হওয়ার যেন আকুতি।

উত্তাল হয়েছে আজ প্রেম দরিয়া,
মহুয়ার নেশায় যেন মেতেছে হিয়া।
দামাল বাতাস ভাঙছে সকল আগল,
যাপনের শত বিধিনিষেধের খুলছে শেকল।

অস্তরাগের আলো ছুঁয়েছে মনের সিঁথি,
ভালোবাসার ছায়া দানে সেজেছে মনবিথী।
প্রেম ঝর্ণায় সদ্যস্নাত একটি মেয়ে,
আলাপী বন্দিশ যতো যাচ্ছে গেয়ে।

এমনই রঙিন দিনের আবেগী হাতছানিতে,
ফিরে যাই পলকে সোনালী অতীতে।
যেখানে উজ্জ্বল আজও আমাদের মধুযাপন,
সেখানেই আবদ্ধ যে আমার মন।।

তোর ছোঁয়ায়

সেই যে সেদিন উড়িয়েছিলাম মেঘলা আঁচল বাতাসে,
মনে পড়ে, তোর ছোঁয়াতেই রঙ পেল তা।
আসমানি নীল মিশলো এসে তার আনাচে-কানাচে,
স্বপ্ন পরীর পাখনা মেলে উড়াল দিল মনটা।

কি জানি কি জাদু ছিল তোর উষ্ণ স্পর্শে,
নিস্তরঙ্গ জীবন নদী উঠল দুকূল ছাপিয়ে।
আপন বেগে পাগলপারা মাতাল হাওয়ার সাথে,
পথ হারানোর নেশায় ছুটল সবেগে দাপিয়ে।

কখন যেন রামধনু রঙ মন ক্যানভাস রাঙালো,
আনকোরা ঐ সাদা পাতার রিক্ততাকে মুছে।
ঠোঁটের গোলাপ পাপড়ি মেলল আদরের রঙ নিয়ে,
ফিকে প্রলেপ যা ছিল সবই গেল ঘুচে।

আবেগী কথায় জড়াচ্ছিল যখন আঙুলগুলো,
শেষ বিকেলের অস্তরাগের আলতো আবীর মেখে।
মন ঘুড়িটা আকাশ ছোঁয়ার বেদম নেশায় মেতে,
নিচ্ছিল যেন গোধূলিবেলার সব গভীরতা চেখে।

কনে দেখা আলো কি স্পর্ধায় ছুঁয়েছিল আমার সিঁথি,
যেন তোরই অবাধ মনের সবটুকু আশকারায়।
ভালোলাগার অবশতায় আগল ভাঙ্গার ডাক,
এমন দিনে বল দেখি তুই, কে না মন হারায়?

ভালোবাসার আতর গন্ধ আমার শরীর-মনে,
চারিয়েছিল শিরায় শিরায় ঝিম ধরানো নেশা।
চাঁদ গলা ঐ জ্যোৎস্না ধারায় রাতের স্নান সেরে,
রূপকথারই লাবণ্যতে চোখ ছিল ভাসা ভাসা।

স্মৃতির এই উজান পথে আজ হয়েছি সওয়ার,
সেদিনের মতো আজও কি সঙ্গী হবি তুই?
আয় না আবার ঘুরে আসি মনের অলিগলি,
প্রথম প্রেমের পরশ নিয়েই ফের জীবনটাকে ছুঁই।

এক অধরা গল্প সাজাই জীবন উপন্যাসে,
জীবন আবার উত্তাপ ছড়াক প্রেমের উষ্ণ শ্বাসে।।

বউ কথা কও ডাকে

কথারা হারায় এসে নিশ্চুপে তোমার চোখের সীমানায়,
মনকে ঠোঁটের কথায় সাজানোটা অগোছালোই থেকে যায়।
তাই বুঝি পথ হাঁটি শুধুই তোমার সমান্তরাল সীমারেখায়?
যেখানে বারোমাস ফাগুন নিজেকে প্রেমপিয়াসী রাধার বেশে সাজায়।

হয়তো বোঝো তুমি, বা বুঝেও অবুঝ থাকো কোন সে ইশারায়!
তবুও অভিযোগে নয়, যত্নে আগলাই তোমায় মনের আস্কারায়।
ক্লান্ত দিনের অবসরে কোথাও হৃদয় পাতার অনুভবে ছুঁতে চাই,
যখন ব্যথায় উজাড় হই, তখন তোমাকেই হাতড়ে বেড়াই।

জানি না তোমায়ও কি এমনই গোপন কিছু অনুভব ছুঁয়ে যায়?
দখিনা বায় কি বসন্ত আগমনের আভাস দেয় তোমার ঠিকানায়?

এমনই কত-শত কথা হৃদয়ের ভাঁজে অধরাই থেকে যায়,
শুধু হলুদ পাখিটা মন বাতায়নে বসে “বউ কথা কও” বলে ডেকে যায়।।

হৃদয়ের সিম্ফনিতে

ঝড়ের একাকী রাতে
নিরাশ্রয় মন ভাঙছিল যখনই,
কোথায় যেন খুলল দুয়ার
অস্পষ্ট এক আবছায়া!

বহুদূরে বাজছে কোথাও সিম্ফনি
হয়তো হৃদয় ছোঁয়ার তারে,
পায়ে পায়ে এগিয়েছি কতক
সুরেলা হাতছানিতেই সেই ছায়াপথে।

কিছু অদেখা উষ্ণতায়
শীতের প্রকোপ কমলো বুঝি,
চেনা-অচেনার ভিড়ে করছি
এ কার অনন্ত খোঁজ?

আড়ালে হাসছে কেউ,
অনুভবে বলছে কানে কানে,
“কিছু সম্পর্ক নামহীন,
তবু হাঁটছি দেখো তুমি-আমি সমান্তরাল পথে…”

আর কত দিন

শিক্ষা কাড়ো, স্বাস্থ্য কাড়ো
কাড়ো রুজি-রোজগার
মসনদকে রক্ষায় কাড়ো
সকল মৌলিক অধিকার
আর কত দিন?

ধ্বংসের খেলায় মেতেছি দেখো
সমাজ করছি তছনছ
খিদে দিয়ে মেরুদণ্ডও ভাঙছি
রক্ষায় ক্ষমতার ভোগ পদ
আর কত দিন?

ভাঙতে ভাঙতে ভাঙছি এবার
মানুষেরই হাড়-গোড়
বশংবদ না হও যদি
প্রাণটি যাবে সত্বর
আর কত দিন?

ভোটের আমি, ভোটের তুমি
সবাই ভোটার সংখ্যা
তোমারই অর্থে তোমাকেই কিনি
কৌশলে শাসকের তকমায়
আর কত দিন?

বিভেদ আনো, দ্বন্দ্ব আনো
খেলো ধর্মের তাস
ব্রিটিশ শাসনের ডিভাইড এণ্ড রুলে
মেটাই ক্ষমতার আশ
আর কত দিন?

পাপের ঘড়া পূর্ণ দেখো
বেজেছে রণ দুন্দুভি
আর কতদিন থাকবে হায়
বাজছে বিদায়ের বাদ্যি
এবার ইতিহাস মেটাবে ঋণ।।

ক্রীতদাস প্রথা’র জবাব চাই

“ক্রীতদাস প্রথা কবে এলো ফিরে?”
হতবাক আজ বিশ্ব!
তবুও কুলুপ সাঁটা মুখে তোমার,
ক্ষমতায়নের পদানত হওয়ার এ কি নিদারুণ দৃশ্য!

ক্ষমতার জোরে যুদ্ধ জাহাজ
কি অনায়াসে পরভূমি ছোঁয়!
বেআইনি যখন অনুপ্রবেশ তবে,
এমন গর্হিত কাজ কি দণ্ডনীয় নয়?

স্বাধীন দেশের আকাশ সীমায়
বিদেশী যুদ্ধ বিমানের অনুপ্রবেশ,
কোন আইনে মাথা পেতে মানলে?
বলো হে মহান দেশজ সন্তান, প্রশ্ন করছে আজ দেশ।

আপনাকে তুমি বিকোও আপাদমস্তক,
দেশকে বিকানোর নেই তোমার অধিকার।
অনুপ্রবেশকারীদের প্রত্যার্পণে,
কোন দেশে, কবে দেখেছো এই ঘৃণ্য ব্যভিচার?

তুমি নাকি দেশের জনগণের অভিভাবক,
জনদরদী তোমার মন!
হাতে-পায়ে শৃঙ্খলিত তোমারই জনতা আজ ক্রীতদাস সম,
তুমি কোথায় খুঁজছো সুখী গৃহকোণ?

মানি না তোমায় দেশ-দশের অভিভাবক,
যে রাখে না নিজভূমের মান।
ছোট ছোট দেশও রাখছে সগর্বে দেখো,
আপন মাতৃভূমির সম্মান।

তোমায় আর ভিনদেশীতে তফাৎ আজ
এতোটুকুও খুঁজে না পাই!
দেখো দেশ আজ ঘৃণায় কেঁদে বলে,
“এমন সন্তানের পরশ না চাই।”

স্বদেশের সম্মান ভূলুণ্ঠিত করার
জেনো কোনো ক্ষমা নাই।
স্বার্থে-সুখে নিমজ্জিত হে পদানত বিবেকহীন প্রধান,
ঐ মহার্ঘ্য আসনে আর তোমায় না মানায়।।

আমি নারী

আমিই সেই মেয়ে, যে সবার মঙ্গল কামনায়,
তুলসী তলায় সাঁঝের প্রদীপ জ্বালে।
যে সবার খুশীকে আপন করে,
আপনাকে সদা ভুলে।
যে, বাবার আদরে আহ্লাদী,
আবার বৃদ্ধ বাবার ভরসা অবলম্বনও সে।
স্বামীর কল্যাণে কল্যাণী,
আবার দরকারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটতেও পারে যে।
আমিই সেই মেয়ে,
যে ঝড়ের রাতে আশ্রয় খুঁজতো মায়ের বুকে,
আর আজ পরম মমতায় আগলায়,
আত্মজাকে পরম সুখে।
আমিই সেই মেয়ে,
যে সংস্কৃতির ধারক, বাহক।
আবার মননে চেতনে আধুনিকা,
প্রগতিশীলও আজন্মক।
ঘরের ঘরনি, স্বামীর প্রিয়া, সন্তানের জননী আমি।
বহুরূপী সত্তায় বাস করি, সকল দায়িত্বের সচেতনতাও জানি।
আমিই প্রকৃতি, সৃষ্টি, আদি,
গঙ্গা রূপে পাপহরা।
আবার আমিই প্রয়োজনে দনুজদলনী,
কালি রূপে বিধ্বংসী লাগাম ছাড়া।
ভালোবাসার আধার আমি,
আমিই সৃজন, উর্বর ভূমি শস্য শ্যামলা।
যে রূপে তুমি বরণ করবে আমায়,
দেখবে সেই ছাঁচেই আমি ঢালা।
নই আমি কোনো পণ্য সামগ্রী,
তোমাদের বেচাকেনার কামনা লালসার হাটে।
আমি তোমার মান আব্রু,
আমার জমিতেই ভবিষ্যতের প্রজন্মরা হাঁটে।।

রঙ লাগুক বসন্তে

হরেক রঙের ফাগে রাঙা রঙিন মুখ,
কিছু রঙ লাগে গালে,
কিছু লাগে মন গহীনে,
রচে প্রেম বিভোরে, অনাবিল সুখ।

প্রকৃতিও খেলে হোলি আপন রঙেতে মেতে,
কিছু বাসন্তী, কিছু কমলা,
কিছু অনুরাগের লালিমায়,
পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়ার আঁচলখানি পেতে।

রাতের নিকষ কালো চাদরেও রঙ লাগুক,
কিছু সোনালী ভোরের,
কিছু বা গোধূলি আলোর,
রাতগুলোও কালিমা মুছে, রঙে রঙে সাজুক।

যে জীবনের সব রঙ গেছে ধুয়ে, তাও হোক রঙিন আবার,
কিছু বন্ধুত্বে, কিছু সান্নিধ্যে,
কিছু স্নেহে- ভালোবাসায়,
জীবনের ধূসরতায় আসুক ফিরে, রামধনুর সকল রঙের জোয়ার।

এভাবেই আসুক বসন্ত, থাকুক বারোমাস, জীবন- যাপন জুড়ে,
কিছু ক্ষণের তরে নয়,
কিছু দিনের সীমারেখাতেও নয়,
আদি অনন্ত কালীন, সকল ধূসরতা, কালিমাকে মুছে, ভালোবাসার রঙে মুড়ে।।

কাব্যের কবিরা

কবির ভাবনায় মালা গাঁথা হয় শব্দের,
যেন এক সুরেলা ঐকতানে।
ভাবনার রং তুলিতে আঁকা হয়
এক নান্দনিক পটচিত্র,
যেখানে অবলীলায় জীবন্ত হয়ে ওঠে অতীত স্মৃতিরা,
অতীতের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া সময়।
কবি করে শব্দ চয়ন কি অপরূপ বিন্যাসে,
যেন শরতের সকালে ঝরে পড়া একমুঠো স্নিগ্ধ শিউলি।
তাঁদের মননশীলতার কাব্যেরা যেন চালচিত্রে গাঁথা,
সৃজনের ডানা মেলে ভেসে যায় ভাবের বাসরে।
মন যেখানে হয় আত্মায় বিলীন,
সেখানেই ফুটে ওঠে কবির মননের ছবি।
মনের সাথে ভাবনার,
ভাবনার সাথে শব্দের কি অপূর্ব মেলবন্ধন।
যেন কালির আঁচড়ে, রিক্ত পাতায় ফোটে ছবি মন দর্পণের,
অনেকাংশই হয়তো পাঠক বোঝে,
কিন্তু কিছু না বোঝা রয়ে যায় কবির মনের অন্তরালে ভাবনার গভীরে,
যা শুধু একান্ত তাঁরই প্রসবিত সত্তা,
যাকে সে আগলে রাখে মনের গোপন প্রকোষ্ঠে ভীষণ যত্নে।
ভাবনার বীজ কখন যে কবিমনের জমিতে পতিত হয়,
কেউ জানে না!
বীজের অঙ্কুরোদ্গমের সময় থেকেই কবি পরম মমতায় করে তার লালন পালন,
তারপর কখন যেন নিমেষে মহীরুহ হয়ে মনের বিস্তৃত জমির নেয় সে দখল!
যতক্ষণ না কবি তা প্রসব করে ততক্ষণ থাকে সে উতলা,
প্রসব বেদনায় লীন।
এ যেন এক গর্ভধারণ কাল,
গর্ভধারণ থেকে প্রসব অবধি থাকে সে তাতেই আত্মস্থ।
প্রসব করার পর যেন এক নিজ সৃষ্টির উল্লাস, আনন্দে রিক্ত হয়ে যায় আপনায় আপনি।।

সুমিতা চৌধুরী | Sumita Choudhury

Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | 2023

পতিতাবৃত্তি ও চন্দননগর | Bengali Article 2023

New Bengali Article 2023 | রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তি জীবনে নারী প্রেম

New Bengali Article 2023 | কবিতা – কী, কেন এবং পাঠকের দায়িত্ব

Shabdodweep Web Magazine | Kobita Lyrics in Bengali | Sumita Choudhury

Kobita Lyrics in Bengali are an essential part of Bengali literary culture, embodying the deep emotions, culture, and history of Bengal. From Rabindranath Tagore to modern poets, Bengali poetry has continually evolved, yet retained its ability to touch the hearts of its readers. At Shabdodweep Web Magazine, we take pride in celebrating Bengali poetry by featuring the finest Kobita lyrics in Bengali, including works from both renowned and emerging poets.

In this article, we will explore the significance of Kobita lyrics in Bengali, why they hold such an esteemed place in Bengali literature, and how they continue to resonate with poetry lovers worldwide. We will also introduce Sumita Choudhury, a prominent poet whose works are featured in Shabdodweep Web Magazine.

What Are Kobita Lyrics in Bengali?

Kobita lyrics in Bengali refer to poetic compositions written in the Bengali language that convey emotions, philosophies, and stories through a rhythmic structure. Bengali poetry has a long-standing tradition of using lyrical forms, ranging from folk verses to modern free verse poems. The beauty of Kobita lyrics in Bengali lies in their ability to seamlessly blend the melody of words with deep meaning, making them accessible and evocative to readers of all ages.

Bengali poetry has always held a special place in literature, with its roots deeply intertwined with the culture, struggles, and celebrations of Bengal. Over time, the lyrical beauty of Bengali poetry has only increased, earning a place in the hearts of many poetry lovers worldwide.

The Importance of Kobita Lyrics in Bengali

Kobita lyrics in Bengali are not just poems; they are reflections of Bengali history, identity, and societal changes. In the 19th and 20th centuries, Bengali poets like Rabindranath Tagore, Kazi Nazrul Islam, and Jibanananda Das created iconic pieces of literature that still echo in the minds of readers today. These poets used lyrical verses to explore complex themes such as love, loss, nature, politics, and spirituality.

For instance, Rabindranath Tagore’s songs (Rabindra Sangeet) are a beautiful blend of lyrical poetry and music, carrying an emotional depth that transcends generations. Similarly, Kazi Nazrul Islam’s poetry is infused with revolutionary zeal and a deep sense of national pride, often conveyed in powerful, lyrical forms.

Today, Kobita lyrics in Bengali continue to evolve, with poets drawing on both traditional and contemporary styles. New-age poets, including Sumita Choudhury, contribute to keeping the tradition alive while infusing modern elements into their works.

Exploring Bengali Poetry and Literature Through Kobita Lyrics in Bengali

At Shabdodweep Web Magazine, we are committed to showcasing the best in Bengali literature, and Kobita lyrics in Bengali form a crucial part of this endeavor. Our platform hosts a range of poetry that reflects both the classical forms and the experimental approaches of contemporary Bengali poets.

The beauty of Kobita lyrics in Bengali lies in their versatility. Whether written in the classic rhythmic structures of Bengali poetry or the free verse style of modern poets, they capture a broad spectrum of human emotions, from the deepest sorrow to the highest joy. The Bengali literature tradition continues to evolve, embracing new voices and ideas while maintaining its connection to cultural heritage.

The Contribution of Sumita Choudhury to Kobita Lyrics in Bengali

One of the notable poets featured on Shabdodweep Web Magazine is Sumita Choudhury, a contemporary poet whose works have touched the hearts of many poetry lovers. Sumita Choudhury’s Kobita lyrics in Bengali explore themes of human emotion, societal norms, and personal growth. Her writing is characterized by its clarity, emotional resonance, and rich language, making it accessible to a wide audience.

Through Sumita Choudhury’s poetry, readers experience the beauty of the Bengali language in its most lyrical form. Her works serve as a bridge between the traditional and the modern, offering a fresh take on the age-old art of Kobita lyrics in Bengali.

How Shabdodweep Web Magazine Enhances the Bengali Poetry Experience

Shabdodweep Web Magazine offers a platform where poetry lovers can easily access a rich collection of Kobita lyrics in Bengali, written by poets from various backgrounds and eras.

The website also acts as a community for Bengali literature enthusiasts, where discussions, collaborations, and even the sharing of new works are encouraged. Whether you are a long-time admirer of Bengali poetry or a newcomer, Kobita Dot Com ensures that everyone can enjoy the beauty of Kobita lyrics in Bengali.

Why Poetry Lovers Should Explore Kobita Lyrics in Bengali

For any poetry lover, Kobita lyrics in Bengali are an absolute must-read. They offer a profound understanding of the Bengali psyche and its rich cultural context. Whether you are reading the timeless works of classical poets or discovering the fresh voices of modern poets, Kobita lyrics in Bengali are bound to leave a lasting impression on your heart.

By exploring Kobita lyrics in Bengali, readers can also gain insight into the development of Bengali literature over the years. From folk poetry to contemporary free verse, Bengali poetry continues to evolve, offering new interpretations of old themes while preserving its historical and cultural roots.

FAQ on Kobita Lyrics in Bengali

  1. What are Kobita lyrics in Bengali?
    Kobita lyrics in Bengali are poems written in the Bengali language that use rhythmic structures to convey deep emotions and philosophical thoughts. They are an essential part of Bengali literature.
  2. Why should I read Kobita lyrics in Bengali?
    Kobita lyrics in Bengali offer a glimpse into the emotional, cultural, and philosophical life of the Bengali people. They are a celebration of the beauty of the Bengali language and its rich literary tradition.
  3. Who is Sumita Choudhury?
    Sumita Choudhury is a renowned contemporary poet whose works are featured on Shabdodweep Web Magazine. Her Kobita lyrics in Bengali explore deep emotional and societal themes, connecting with readers worldwide.
  4. How can I explore Kobita lyrics in Bengali?
    You can explore Kobita lyrics in Bengali through platform like Shabdodweep Web Magazine, which feature poems from both classical and modern poets.
  5. Can I contribute my poetry to Shabdodweep Web Magazine?
    Yes, Shabdodweep Web Magazine encourages aspiring poets to submit their work for publication. It is an excellent platform for new voices in Bengali literature to share their Kobita lyrics in Bengali with a larger audience.

Conclusion

Kobita lyrics in Bengali are more than just poems – they are expressions of culture, emotion, and history. Whether you’re exploring the works of legendary poets like Rabindranath Tagore or discovering fresh voices like Sumita Choudhury, the world of Bengali poetry offers something for everyone. At Shabdodweep Web Magazine, we are proud to feature a wide array of Bengali poetry, including these evocative Kobita lyrics in Bengali that continue to captivate poetry lovers and literature enthusiasts alike.

Dive into the world of Kobita lyrics in Bengali today and experience the profound beauty of Bengali literature!


Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment