Famous Bengali Poetry Forms | Best Bangla Kobita

Sharing Is Caring:

Bengali Poetry Forms – Abdus Salam

পরিচয়

হকারদের ফুসফুস থেকে আসছে গরম ধোঁয়া
উপচে পড়ছে অন্তর্বর্তী শোক
ঘামভেজা গেঞ্জির গন্ধে চনমন করছে খিদে
শোকের হাঁড়িতে সিদ্ধ হয় আপোষহীন কিংবদন্তি
বেঁচে থাকার নগরে ঈশ্বর ও গড়াগড়ি খায়

অস্তিত্বের সংকট নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে পাড়া
ঋণ ভারে জর্জরিত আমাদের বেঁচে থাকা
পিতার শ্বাসকষ্টে লেখা আছে ভ্রষ্টাচারের দর্শন
অসহায় খাঁ খাঁ গিলে নেয় বিষণ্ণ দুপুর

খিচুড়ির থালায় হাবুডুবু খায় বাল্যকাল

পরিচয় লিপি খুঁজে দেখি আমি হকারের বংশধর

বিড়ম্বনা

অবজ্ঞার বহর ক্রমশঃ হয়ে চলেছে দীর্ঘ
রাস্তা হয়ে আসছে ছোট
মিলিত অবজ্ঞাগুলো ভুল রাস্তায় লিখছে প্রণয়ের গান
মিশে যাওয়ার অসাধ্য সাধনা করেছি রাত দিন

বিবেকের প্রত্ন নগর ঘিরে ধরেছে অন্ধকার

জটিল ঘূর্ণাবর্তে মিশে যায় বিনম্র আবেদন
বিদ্যাসাগরীয় উপদেশগুলো ডিপফ্রিজে বন্দী
সদা সত্য কথা বলিবের ছায়ারা দীর্ঘতর হয়
বিড়ম্বনার দেওয়ালে টাঙানো বশ না মানার ব্যাকরণ
শূন্যের নামতা পড়ে পর্ণমোচী দুঃখের ব্যাকরণ

শৈশব ও পূজার দিন

পেঁজা তুলার মত শৈশব উড়ে
কাশফুলের বোঝা আনে যক্ষ্মাক্রান্ত বাবা
মা বোনে টুকি, সর্পোস
মাঠের পুকুরে ফোটে লাল-সাদা হ্যালা
সে ফুলেই গাঁথি মালা
এক বেলা দিব্যি চলে যায় চিবিয়ে ডাঁটা
তালের আঁঠি চুষে বেলা গড়িয়ে যায়

বিষন্ন মায়ের আঁচল
মলিন বাসি মুখে উড়ে ধুলা,
হাজী মায়ের বদান্যতায় মিলে বাসি রুটি শরতের হাসি
তখন আসে উঠোন ভরে মায়ের আঁচলে নেমে আসে আকাশ
সর্দি লাগা ভাইয়ের চোখে তখনও পিছুটি নাকের সর্দি সমেত তালের আঁটি চুষে ভাই
স্যাঁতসেঁতে বারান্দায় আমরা নেচে উঠি ঢাকের তালে নেচে উঠে বিমূর্ত সুখ
দূরে সবকাদিঘীর পাড় থেকে শুনতে পাই আসছে বছর আবার হবে
বাবা ক্ষখ্ ক্ষখ্ করে কাসে
শরতের নগ্ন কাশ ফুলে ভাসে আমার শৈশব, আমার জান, আমার প্রতিবেশী —

পান্ডুলিপি

ছায়া পথের উপর হেঁটে চলেছি
উৎসাহ টগবগ করে ফুটছে
ভাড়া নিয়েছি অলীক ঈশ্বরের পৃথিবী

ইচ্ছে গুলো চিৎসাঁতার ডুবসাঁতার
কোন জ‍্যামিতিক উৎস নেই
অনুভব পৃথিবীর বাস্তবতা গিলে খায়
হারিয়ে যায় নীরব পাণ্ডুলিপি

বিস্ময়ের যাত্রাপথে রত্ন খচিত উনুন
রান্না হয় হবিষান্ন
বিষণ্ণ উৎসাহে ঝরে পড়ে মেঘেদের অশ্রু
অসীম আকাশে ঝুলছে মাত্রাহীন পীড়ন

রান্না হয় জনশূন্য শূন্যতা
মহাজাগতিক অশ্লীলতা চুষে খায় মেঘেরা
অসীম দূরত্বে আঁকা হয় মরু চিহ্ন
পতাকা ওড়ে বিস্ময়ের মরুভূমিতে
ঝরে পড়ে দিকভ্রান্ত বস্তির অলীক নির্মাণ

অশ্রু লেগে আছে মেঘেদের ডানায়

একটা অভিমানী মৃত্যু কথা

প্রাগৈতিহাসিক বিকেলে ডুবে যাচ্ছে সূর্য
মর্মান্তিক জলাধারে খুঁজে চলেছি মৃত্যুর অস্তিত্ব
কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে অবিবাহিত সম্বন্ধ
পৃথিবীর মহাজোটে সামিল পরিত‍্যক্ত ভোর

পাখিরা উড়িয়ে দিচ্ছে ব‍্যভিচার
নাগরদোলায় পাক খাচ্ছে অসংযমের ভাস্কর্য
সূর্য হেঁটে চলেছে জীবন মরণের রাস্তায়
ভাগ‍্যহীন বারান্দায় লুটোপুটি খায় তৃষ্ণার্ত ভোর

হাহাকার খুঁজে চলেছে গত জন্মের দলিল অভিমান নিয়ে সূর্য ডুবছে রাতের কোলে
বসত হারানোর যন্ত্রণা দিচ্ছে প্রলেপ
উপশম বন্ধক রাখছি মৃত্যুর কাছে

প্রেম পড়ে রইলো নির্বোধ আঙিনায়

হতাশার রোদ

সময়ের কড়াইয়ে সেদ্ধ হয় ধর্মের পিচ্ছিল আবেদন
বেহালায় বাজে সংবেদনশীল পিচ্ছিল সুর চুষতে শুরু করি রাজনৈতিক স্তন
বিলাসী পায়রারা বকম বকম আহ্লাদে মগ্ন
দ্রবীভূত রক্তের ভেতর সক্রিয় হয় কর্দমাক্ত কান্না

হতাশার রোদে পুড়ে যায় ভীরু মুখ
ভীরু রাস্তা কাঁদে —
ভাষা হীন মাটির বুকে বাসা বাঁধে কর্কট রোগ
গান শুনি ভ্রষ্ট বালিয়াড়ির
মরুময় সহানুভূতি জড়ো হলে
ভ্রষ্ট চরিত্রের শরীরে শোভা পায় ভ্রষ্ট কবিতা

ঈর্ষার চাঁদ নামে রাতের কার্নিশে
জলের মতো টুপ টুপ করে ঝরে পড়ে ক্ষুধা কান্না আর জ্বালাময় যন্ত্রণার ইতিহাস।।

লুকোচুরি

চেতনার ছায়াঘেরা পথে ধূসর অস্তিত্বের দারিদ্র্য চমকে দেয়
বিষাদ পোশাকে ঢেকে রাখি সম্ভ্রম

আমরা ঝাঁকে ঝাঁকে বড় হই
ঝাঁকে ঝাঁকে মরি
করি অন্ন- বস্ত্র- বাসস্থানের গান

ডানায় বেঁধে দেয় ময়ূরের পালক
লাঠি সোটা নিয়ে নেমে পড়ি দাদাদের এলাকা দখলের খেলায়
বেশি বেশি পাওয়ার লোভে দল ছুট হই শেকড়হীন অস্তিত্বের কথা তখন মাথায় থাকে না

ভুলে যায় অলৌকিক দলের ছত্রছায়ায় আমরা পুষ্ট

নিশানা বদল হলে অসহায় সমুদ্রে অপ্রিয় প্রেমের প্রস্তাব পাঠায়
ভ্রান্ত আশকারাগুলো ঢেউয়ের তালে তালে নাচে

ধূর্ত শেয়াল মাথা মোড়ানোর ঘুঁটি সাজায়
খেতে এসে হয়ে যায় খাবার
কালের সীমানায় নষ্ট হয় হৃদয়ের স্বরলিপি

জীবন জুড়ে ব্যথার মলম লাগায়
পড়ি মনুষ্যত্বহীনের রঙিন চশমা
ডুবে যায় চাঁদ —
ঝড়ে উড়ে যায় মনুষ্যত্ব
অভিমানগুলো সচেতনার ছায়ায় ডুবে যায় সমৃদ্ধি মাতাল অস্তিত্ব অবতারে মূর্তি বানায়
ঢেকে রাখি লুকোচুরির গহীন পথ

নতুন বছরের গান

উঠোন জুড়ে পড়ে আছে সব নিরীহ অভ্যাস
সব ক্লান্তি ভুলে ওরা ও ঝিকমিক করছে দেখো
নতুন দিনের স্বপ্ন মেখে সূর্যটাও সেজেছে অপরূপ সাজে

চারিদিকে আর কোন আঁধার নেই

চলো সব সূর্যের কাছে বরণডালা সাজায়

ভেসে আসছে ভোরের আজান, ঘরে ঘরে বেজে উঠছে শঙ্খ
চলো মসজিদে নামাজ পড়ে আর মন্দিরে পুজো দিয়ে বছরের প্রথম দিনের সিঁড়িতে পা রাখি

গান করি সবুজ পৃথিবীর

খতিয়ান বদল

দিন বদলের সীমানায় খতিয়ান বদলে যায়
বীভৎসদিন প্রহরাবিহীন করিডোরে বন্দি
সভ‍্যতার বিকাশ পথে উল্লাস শ্লোগান দেয়
ক্ষমতা দেখা দেখানোর খেলা চলে নিরন্তর

ভুয়ো সংস্কারের স্বরলিপি লেখে নষ্ট মানুষ
একমনে করুন সুরে বাজে বেহালায়
জীবনের আনাচে কানাচে খুঁজে পায় সর্বনাশ

উল্লাস গেয়ে চলে ভৈরবী
পাল্টে যায় সংবিধান
অদ্ভুত সব পঙক্তি দিয়ে রচিত হয় সভ‍্যতার গান

নারী আর্তনাদে কাঁপে সভ‍্যতার প্রাচীর
ক্ষুধা আর অপুষ্টির খতিয়ানে অবিচার ডানা মেলে

শপিং মলের দরজায় শুয়ে থাকে জীবন্ত লাশ
অত্যাচারের বাজনা বাজে তারস্বরে

রাতের আকাশে আঁকা হয় নিষিদ্ধ আলপনা
স্বপ্নেরা আল্পনার শ্লীলতাহানি করে

নিষিদ্ধ প্রান্তর, জঙ্গলে খেলা করে সভ‍্যতা
দুমড়ে মুচড়ে যায় প্রকৃতির গর্ব
স্বর্গ বানায় ইট কাট পাথরে
পুরুষ সভ‍্যতার খতিয়ান বারবার বদলে যায়

সর্বনাম

দেহের অব্যক্ত ভাষায় লিখে দিলাম যন্ত্রণা
ছায়াহীন নিজস্বতা খুঁজি সীমানার ওপারে
লজ্জাহীন উঠোনে এঁকে দিলাম সঙ্গমের কোলাহল
মৃত বিবেক নিয়ে ঝুমঝুমি বাজায় মানবিক সর্বনাম

অন্ধকার পথে আবেগ হাতড়ায় পথ
অসহায় চুমু খায় মানবিক আহ্লাদে
হাহাকার বাঁশি বাজালে পুড়ে যায় ভালোবাসার ঘর

সময়ের নদীতে ভেসে যায় সর্বনাম
প্রত্নযুগের চূড়ায় খেলা করে মায়াদৃশ্য
কান্না পোড়া ছাই নিয়ে তিলক আঁকি কপালে

ঠিকানা

গ্রামের প্রাচীন ছায়ার নিচে আমি দাঁড়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুভব লুটোপুটি করে
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে যাচ্ছে আমাদের সব আশা

বিপন্ন জীবনের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছি
চোখের সামনে ধ্বসে যাচ্ছে মূল্যবোধের ছাদ
চন্দ্রযান -নিয়ে গেছে সব আশা
অমসৃণ উপত্যকায় লেখা হচ্ছে আহাজারি বয়ান
অতিথি শালায় ঝুলছে নামহীন জীবনের আলোকচিত্র

মৃত মানুষেরা কাঁদছে জাহান্নামের বারান্দায়
ভয়াবহ নিস্তব্ধতার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে আত্মজীবনী
অন্ধবিশ্বাসগুলোকে শুয়ে দিলাম কবরে

অনুভূতির ডাকঘরে ফেলে এলাম প্রাচীন ঠিকানা

মরুপাহাড়ের আয়ুহীন ভবিষ্যৎ

প্রাপ্তবয়স্ক আঁধার ঘিরে ধরেছে পথ
সামনে আয়ুহীন ভবিষ্যৎ
ক্ষুধা তৃষ্ণায় টালমাটাল পা

মানবিক জানলা দিয়ে ঢুকছে শূন্যতার বিকারগ্রস্ত মেঘ
দম বন্ধ করা আঁধার বুনছে চক্রান্তের জাল
আধ্যাত্মিক জ্ঞান দিচ্ছে ধর্ম মানুষ

বিমর্ষ পৌরুষ জুড়ে মরুপাহাড়ের নিঃস্ব অহংকার
সফল পুরুষ রাজনৈতিক ব্যাকরণের গল্প শোনায়
জীবনের গল্প গুলো তখন প্যাঁচার বাসায় ঘুম পাড়ে
নিরর্থ মানুষের পাশে ঘুরঘুর করে নিরক্ষর ছায়া

বেকারগ্রস্থ মানুষ ডুবে যায় বিপদসংকুল খাদে
তীরভূমি ছুঁয়ে থাকে অবশিষ্ট বিষাদ উপাসনালয়ে জুড়ে পড়ে আছে বন্দরের সঙ্গম
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাথায় ঝুলছে দুর্যোগের চিহ্ন
মৃত্যুর উৎসব শেষ হলে ছায়াজন্ম মেনে নেয় আনুগত্যের শিলালিপি

মরা নদীর বিতর্ক

অমীমাংসিত বিতর্কের শেষ হয়নি এখনো
সামান্য চাওয়া নিয়ে তুমুল বিতর্কের ফেনা ওঠে
অমার্জিত বচন: রাতের আঁধারে তাড়া করে আতঙ্ক
ভয়হীন, নিদ্রাহীন একাকীত্ব মেনে নেয় জীবনের উষ্ণতা
চৈত্রের মরা নদীতে ডুকরে কেঁদেছিল বিতর্ক

মাথা ব্যথা বেড়েছিল সবার
অপূরণীয় হতাশায় বিতর্ক গোঁ ধরেছিল সেদিন
সামনে অমীমাংসিত পথ
বাঁচার আনন্দগুলোও মরতে বসেছিল

ঘটা করে বিদায়ের কালে কেন ঝরে ছিল দু’ফোটা লোনা জল?
জানি না এভাবেই কষ্টেরা ক্ষয়ে যাওয়া একাকীত্বের উষ্ণায়নে খুঁজে ছিল পানকৌড়ির জগত

বৃষ্টির আশ্রয়ে খুঁজে পেলাম প্রেমানন্দকে উন্মাদ বৃষ্টির চূড়ান্ত পর্বে পেয়ালা ভরে নিয়েছি সম্পর্কের নিমরস
আজও বিতর্ক দাঁড়ি টানেনি
হয়তোবা টানা হবেও না কোনদিন

অমীমাংসিত প্রেম বাঁচার আটচালায় বিচ্ছেদের গান ধরে
বিতর্ক ডানা মেলে ডানা মেলে উড়ছে এখনো

তবু বুক বেঁধে আছি মরা নদীর বিতর্কে মীমাংসিত সূর্য কতটা মানবিক

শূন্য প্রেমের নিষিদ্ধ গবেষণা

হাওয়ার ঠোঁটে উড়ে আসছে নিঃসঙ্গ সাপ নিরাভরণ ভঙ্গিতে সে সময়ের গল্প বলে যাপন সূর্যের প্রখর দহনে শুকায় স্নিগ্ধ জীবনের পেলব মাটি
ঘুমেরা জোছনার ঘুঙ্গুর বাজায় আর শোনায় নিঝুম রাতের গান

রোদের অন্তর্বাসে নবায়ন হয় শূন্যতার সংক্রমণ
নেচে ওঠে শূন্যের যন্ত্রণা

ছুটে চলেছি সংবিধানের মাঠে
জীবন জীবিকার দৌড়, যশস্বী হওয়ার দৌড়ে আমরা সবাই ক্লান্ত
কাউকে না ধরতে দেওয়ার সব স্কুল পড়ুয়া

শত পাপ, শঠতা লুকিয়ে রাখি জীবনের অ্যালবামে
হাওয়ার ঠোঁটে চুমু খায় অসাংবিধানিক সাপ
সম্পর্কহীন নিঃসঙ্গে উঠোনে উদ্বেগ ডানা মেলে
পরিবর্তনের মাঠে লিখে রাখি নিষিদ্ধ প্রেমের অশ্লীল সন্দেহ
লুকিয়ে রাখি নিষিদ্ধ প্রেমের মনস্তাত্ত্বিক গবেষণাপত্র

লুকোচুরি

চেতনার ছায়াঘেরা পথে ধূসর অস্তিত্বের দারিদ্র্য চমকে দেয়
বিষাদ পোশাকে ঢেকে রাখি সম্ভ্রম

আমরা ঝাঁকে ঝাঁকে বড় হই
ঝাঁকে ঝাঁকে মরি
করি অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের গান

ডানায় বেঁধে দেয় ময়ূরের পালক
লাঠি সোটা নিয়ে নেমে পড়ি দাদাদের এলাকা দখলের খেলায়
বেশি বেশি পাওয়ার লোভে দল ছুট হই শেকড়হীন অস্তিত্বের কথা তখন মাথায় থাকে না

ভুলে যায় অলৌকিক দলের ছত্রছায়ায় আমরা পুষ্ট

নিশানা বদল হলে অসহায় সমুদ্রে অপ্রিয় প্রেমের প্রস্তাব পাঠায়
ভ্রান্ত আশকারাগুলো ঢেউয়ের তালে তালে নাচে

ধূর্ত শেয়াল মাথা মোড়ানোর ঘুঁটি সাজায়
খেতে এসে হয়ে যায় খাবার
কালের সীমানায় নষ্ট হয় হৃদয়ের স্বরলিপি

জীবন জুড়ে ব্যথার মলম লাগায়
পড়ি মনুষ্যত্বহীনের রঙিন চশমা
ডুবে যায় চাঁদ —
ঝড়ে উড়ে যায় মনুষ্যত্ব
অভিমানগুলো সচেতনতার ছায়ায় ডুবে যায় সমৃদ্ধি মাতাল অস্তিত্ব অবতারে মূর্তি বানায়
ঢেকে রাখি লুকোচুরির গহীন পথ

প্রেম

এক

শূন্যতার দ্রাঘিমায় মেপে নিলাম তোমাকে ঘোর লাগা মাতাল আয়নায় দেখি নিজেকে
সরল অভিমানে কুয়াশাগুলো নদী হয়

ঝরনার পাশে ফুটে আছে গোলাপ আমার বিনাশ লেখা তোমার চুলের ঘ্রাণে

দুই

ভাসমান সৌরভে মেতে উঠি
নীল চোখে আসমান- জমিন একাকার

মাঝে মাঝে অভিমানের নদীতে স্নান করি
প্রস্তুতি সারি অভিসারী আত্মার মিলন বিভ্রাট লিখতে
মিলন মেলায় খুঁজে পাই সুইসাইড নোট
মৃত্যুর হিমশীতল মূল্যবোধ ক্ষমতার কাছে নতি স্বীকার করে

তিন

সংসার বাঁধে সনাতন পাখিরা
আদুরে নাম লিখে প্রেমের উষ্ণতা মেখে উৎসবের ঋতু এগিয়ে এলে দশমীর চাঁদ ওঠে
পরিচয়ের আস্তানায় বাসা বাঁধে শারদীয়ার চাঁদ

চার

বিকেল রঙের রোদ ছায়া ফেলে পাথুরে চাতালে

স্বপ্নেরা প্রজাপতি ওড়ালে বেজে উঠে বিরোধী নূপুর
চুপিসারে পরিচয় মাখা হাত ছুঁয়ে দেয় আত্মহারা নৌকা
আত্মপক্ষ সমর্থন ছুটে যায় ভাটার টানে
পড়ে থাকে অস্তিত্ব সংকটের ক্রিয়াশীল নিঃসঙ্গতার মেঘ

রূপকথার বক

করোনা মাখানো শ্বাসকষ্টের সংসার শব্দহীন যাতনাগুলো বৃষ্টিবাদলে ঝাপটা খায়
চুমু খায় বিপন্ন বিশ্বাস

শব্দের আলনায় টাঙিয়ে রাখি স্বপ্ন
রক্তাক্ত বিবেক চড়ে জীবনের পিঠে
চুরমার হওয়া মানুষগুলো শোনে অন্ধকারের ভাষণ
আত্মক্ষরণের পুকুরে স্নান সেরে শুদ্ধ হই

বসবাসের ঠিকানায় দাফন হয় সভ্যতার ভাবের ঘরে রুদালীরা আসে
অলীক কান্নার বাষ্পায়নে মুখর করে মহল্লা
দুঃখের প্রহসন সাজায়,
মৃত শবের উপর ভনভন করে মাছি
ভাঙা রেলিঙে বসে শিকার খোঁজে প্রত্যাশার বক

আমাদের আশ্বাস গুলো ঢেউয়ে ঢেউয়ে মাতোয়ারা
প্রার্থনার ঘরে বসে আছে অলীক ভগবান বিশ্বাসের চাতালে মাথা ঠুঁকি দুবেলা
নিদ্রালু চোখে পুরোহিত ছিটিয়ে দেয় শান্তিজল

রূপকথার পাতালপুরীতে তলিয়ে যাচ্ছে আমাদের সব আহ্লাদ

মা

নীরব অভিমানগুলো পিষে পিষে মসলা বানায় রোজ
অধিকারের হাঁড়িতে রান্না হয় নিঃশব্দ অন্ধকার
যন্ত্রণা আর বিষাদ গুলো ঘুরঘুর করে সারাদিন
উল্লাসের বাজপাখি তুলে নিয়ে যায় সব সুখ

সভ্যতার বক বয়ে নিয়ে চলেছে বিবেকের লাশ
বিশ্বাসের সেতুটা বড্ড নড়বড়ে
তাই
ভাঙ্গা নৌকায় পার হয় সফলতার ঘাট
দ্বান্দ্বিক চাঁদের আগুনে ঝলসে ওঠে মফস্বল সংসার

দুবেলা সেবন করে পুরুষবিশ্বাসের বড়ি
উপশম হয় নৈতিক বিপ্লবের অ্যালজেবরা
বিবর্ণ দুয়ারে পড়ে থাকে বাসি ফুলের বিদ্রুপ

মৃত শবের উপর ভনভন করে মাছি
বসবাসের ঠিকানায় গড়ে ওঠে সভ্যতার কবর

সময়ের উপত্যকা

আন্তর্জাতিক হবো বলে মেঘের ডানায় গুজে দিলাম অস্তিত্ব
সারাদিন সংসারে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
সময়ের উপত্যকায় বয়ছে হতাশার সংলাপ
সৈনিকের মা কাঁদছে
কাঁদছে মৃত সৈনিকের বৌ
নেতারা ছড়ায় সম্মোহনী বাতাসা
বিলি হচ্ছে অস্তিত্বহীনের সার্টিফিকেট

আন্তর্জাতিক হবো বলে অস্তিত্বের শেকড় কেটে মাথায় জল ঢালা শিখছে—

ছেঁড়া ভূগোল

নীরবতার আর এক নাম আশ্রয়;
ভাঙাচোরা সময়ের ভূগোল মেরামত করছি রোজ
নিরন্ন মুখগুলো গোপন কান্নার আলনা সাজায়
দারিদ্র রেখা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় অমাবস্যার রাত
পুলিশের ইশারায় মাতৃভূমি কাঁপে —
নরম হাড়ের সিঁড়ি বেয়ে নামে পুলিশের ভাষা
সব ভালোবাসার ঘর ছাদহীন হয়ে যায় দেশ ভালবাসি মানুষ ভালবাসি
রাত গভীর হলে ভালোবাসার চাপে শিরদাঁড়া ভাঙে
বস্তির আকাশে অজানা শব্দগুলো পাক খায়
জাতপাতের লড়াইয়ের সামাজিক ধর্ষকেরা নীরবতা শেখায়
নীরবতার সুতো দিয়ে ছেঁড়া ভূগোল সেলাই করি রোজ।

বিপন্ন অস্তিত্বের নিবন্ধ

প্রচ্ছন্ন অক্ষরে লিখি অন্ধকার ভারতের কথা
সহনশীলতা সংকেত পাঠায় পরকালের
দুঃস্বপ্নের ভিতর অবিশ্বাস দাঁত খিঁচোয়
সর্বক্ষণ পাহারা দেয় অসহায়

কলঙ্কের চুম্বন মেখে নিই সহিষ্ণু রোদে
অদ্ভুত বিশ্রামে দুলে ওঠে সত‍্যের পর্যটন
ভেসে ভেসে আসে আস্ফালন

মেঘেরা দরজা খুলে পালায়
বিপন্নতা সাজিয়ে দেয় কলঙ্কের বাসর
ভয় তাড়া করে
মৃত্যুর উপকন্ঠে অপার্থিব কর্তব্য অঙ্গহীন ভারতবর্ষের গান করে
আমরা নেচে উঠি

আমাদের অস্তিত্ব গুলো এভাবেই বিপন্ন হয় প্রতিদিন

এখনও রোদ খেলা করে

স্যাঁতসেঁতে উঠোনে
খেলা করে মেঘ ভর্তি রোদ

পড়ন্ত বেলার ভাত
পেটের ভিতর জ্বলছে উনুন
দাদু বলতেন” ভাত মজা না ভাত মজা”
পুঁইশাক দিয়ে এঁটে চচ্চড়ি
বাসি ডাল হেজে যাওয়া গন্ধ নাকে পর্যটনে মগ্ন
মরা ডালে কাকেরা সভা করে

দুটাকা দরের রেশনের চাল
পুঁইশাকের ঝোলে ভাতেরা কই মাছ হয় পর্বত জয় করে
কাঁচা লঙ্কা মেখে তৃপ্তির চুমু দিই

ছাপোষা সংসার ডানা ঝাপটায়
বি পি এল লিষ্টে নাম দেয়নি নেম্বারে
কেমন করে জেনে গেছে ভোট পড়েনি ওর বাক্সে
পোয়াতি বউ এর মুখটা বড্ড করুন
ভেবেছিল এবার হয়তো একটা ঘর হবে

লালিত স্বপ্নের মোহময় শিমুল ফুল পড়ে আছে ফুটপাতে
আকাশের গায়ে কারা যেন ছিটিয়ে দিয়েছে নুন
সীমানা পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের বসে আসর
কাজ হারানোর গান বাজছে ঘরে ঘরে
দেশি কুল দিয়ে চলবে বৌ এর সাদ্ ভক্ষণ পর্ব

বড়ো বাড়ির মেয়েরা এখন বাঁধে না চুল
উত্তুঙ্গু যৌবন মেলে ধরে বাতাসে
পার্কের বেঞ্চিতে মেলে ধরে আলিঙ্গন
সভ‍্যতার বাতাসে ওড়ে ভ‍্যালেন্টাইনের কবিতা

নিত্য দিন ভাত শূন্য হাঁড়িতে রোদ হাবুডুবু খায়
ছেঁড়া সংসারে খেলা করে মা
কষ্টের ভারতবর্ষে কষ্টের পতাকা ওড়ে
এসেছে ভোটের মরশুম

পাড়ার মোড়ে মোড়ে পতাকায় আঁকা তোলপাড় করা চিত্রকলা

নিয়মের ঘেরাটোপে

পৃথিবী হেলে আছে তাই ঋতু পরিবর্তন হয়
আবেগের হাততালিতে ঝরে পড়ে বিশ্বাস
মাঝে মাঝে পৃথিবীর সাধ হয় নিজেকে সাজাতে
ঝরায় নিজের চিরহরিৎ রূপ

চেষ্টায় আছি মিথ্যের দেশে ঘরবাড়ি বানাতে
জরামৃত‍্যু পথ আগলে জিজ্ঞাসা করে কুশল
সব বিশ্বাস তখন অবিশ্বাসের মুন্ডুছেদ করে

আমরা যে কেন জন্মেছি জানিনা
পৃথিবীর বুকে মেলে দিলাম কিছু আস্ফালন

অলীক অভিসার

মন জুড়ে শুধু অশান্ত ঢেউ

উথাল পাথাল রোদ্দুর
ভাসে অরণ্যের গান
হাওয়া চেটে নেয় বিশ্বাসের পুঁটলি

ইতিহাসের পাতা থেকে উড়ে আসে সভ্যতার স্বর
বিছানা জুড়ে পড়ে আছে বিষণ্ণ অবকাশ
পৃথিবীর ছায়া স্ক্যান করলে ধরা পড়ে অলীক মোহ
আর মোহময় পৃথিবীর আয়ু জুড়ে আছে শুধুই খোলস

দিগন্তের ওপারে শুনতে পাই নির্জন কীটের ভাষা

সীমান্তে প্রেম হাতছানি দেয় – আবদুস সালাম

সীমান্তে প্রেম হাতছানি দেয় বৈরাগ্যের ব্যালকনিতে
ভাঙ্গা সূর্য কুড়িয়ে নিচ্ছে রোদ
দীর্ঘশ্বাস ভাঙা জানালায় বসে
রাজপুত্তুরের গল্প শোনায়
সীমান্তে আলোর শক্তি জেগে উঠলে
অপেক্ষারা তীব্র শোকে পিপাসার গালে চুমু দেয়

ভূগোলের স্বভাব পৌরুষত্বের ঘামে ভিজে যাওয়া
হামাগুড়ি দেওয়া বিকেল নষ্ট সভ্যতার গল্প শোনে
অসংকোচ ডানা মেলে বেভুল আকাশে
বৈরাগ্যের আশা আকাঙ্খাগুলো তখন নিপীড়িত আত্মার কাছে
ক্ষমা প্রার্থনা করে বৈরাগ্যের নদীতে

ধূসর উৎসব

রাষ্ট্র পালন করছে রক্ত রঙের উৎসব
টাঙিয়ে রাখি রক্ত পতাকা
হোলি খেলি ধ্বংসের ময়দানে
রক্ত পতাকা দেখতে ভালোবাসে আমাদের দ্বিতীয় ভগবান

হয়তো প্রথম ভগবান ঘুমিয়ে পড়েছে অবসাদ মেখে
হয়তো আর আমাদের চিৎকার পৌঁছায় না তার কানে
বিশ্বাসের মূলে বাসা বেঁধেছে উইপোকা

নতুন প্রজন্ম মুখস্থ করছে অত্যাচারের নামতা
মনুষ্যত্বের মরণ দেখতে ওরা ভালোবাসে
টনটন বোমা পড়ছে বসতি এলাকায়
শিশুদের আর্ত চিৎকারে কেঁপে ওঠে আকাশ
বাতাস ফুঁপিয়ে কাঁদে
ভেসে যায় মানবিক আবেদন
এসব চিত্রনাট্য লিখছেন স্বয়ং দ্বিতীয় ভগবান
আমরা অভিনয় করে চলেছি

আমরা বেঁচে থাকি

শপিং মলের বারান্দায় দিব্যি ঘুমোয়
ইঁটের বালিশ, সিমেন্ট বস্তার বিছানা
সকালে কুকুরের সাথে আমাকেও দু’খানা বিস্কুট দেয় মালিক
আমরা রোজ খবর হই

কোথাও চুরি কিংবা রাহাজানি হলে দারোগা তুলে নিয়ে যায় থানায়
কোমরে দড়ি বাঁধে
দু’চারখানা রুলের বাড়ি ও পিঠে পড়ে
ডেনরাইটে ভিজিয়ে নিই গামছা

আমাদের তো একটু নেশা করতে ইচ্ছে হয় বলুন
এভাবেই আমাদের ফুটপাতে আমরা প্রেম করি
আমাদের সংসার হয়
আমরা বেড়ে উঠি
এভাবেই আমরা সখের কবিদের কবিতার লাইন হই প্রতিদিন

দৃশ্যপট

শূন্যতার ধূসর পথ
দীর্ঘ সময় যাপনে পূর্বপুরুষেরা কাব্যিক হয়
আরব্য রজনীর নাবিকেরা বাজায় বিচ্ছেদের সুর
করোনার ঢেউয়ে ভাসছে মূল্যবোধ সংঘাত মেনে হাত ধুয়ে নিয়ে সমুদ্রের ঘাটে

অসহায় মা বাবা আজ প্রবন্ধ যাপনে বাধ্য স্মৃতির প্রত্নপ্রান্তরে লিখে রাখি ধ্রুপদের স্বরলিপি
ভালোবাসার বাগানে শোভা পায় কুয়াশার ফুল

পলিথিনের বিছানায় শুয়ে আছে ছাদহীন শহর
রাত ঘুমিয়ে পড়ে শূন্যতার বালিশে,
শূন্যতা ডুগডুগি বাজায়

সার্কাসের জোকার সেজে মাতিয়ে রাখি আসর
শহর জুড়ে পড়ে থাকে অসম্পর্কের রোদ বুক পকেটে সাজিয়ে রাখি চৈত্রের দুপুর

কোলাহল

ইতিহাসের সব আয়োজন ডুবে যায় অন্ধকারে
শতাব্দীর দুয়ারে কড়া নাড়ছে মহাকাল
সভ্যতার ফসিলে খুঁজে পাই ইতিহাসের ঠিকানা

বৈষয়িক বিকেলে পড়ে আছে রাজধানীর ছিন্ন বীণা
দাউ দাউ করে জ্বলছে বিদ্বেষের আগুন
পুড়ে যাচ্ছে গণতন্ত্রের ঘর বাড়ি
বিচ্ছিন্নতাবাদী রোদ ঝলসে দেয় সম্প্রীতির উঠোন

শকুনেরা পাহারা দেয় বিশ্বাসের পাড়া
মৃত বিবেক কৌশলী মগ্নতায় ডুগডুগি বাজায়
ভুলে যায় প্রতিবাদের ভাষা
সহানুভূতির দরজায় কার পায়ের ছাপ কে জানে
মনুষ্য চামড়া দিয়ে সাজায় উৎসবের বাড়ি

আকাঙ্ক্ষারা গান শোনায় বাঁকা চাঁদের
সর্বনাশী জ্বরে পুড়ে যায় সম্প্রীতির উঠোন
ঘরে ঘরে বাজে ধর্ষিতার গান
মৃত বিবেক ভুলে গেছে বেঁচে থাকার মানে
পাড়ার মোড়ে মোড়ে জেগে আছে কোলাহল

প্রচ্ছদ

বিব্রত বাতাসের তোড়ে উড়ে যায় সম্ভ্রম
সকালের রক্তিম সূর্য ডানা মেলে দিলে স্বচ্ছতা আসে
দিনের বিশ্বাস ভঙ্গ হয় বলে রাতের পূজা করি

বিনম্র বিশ্বাস বিসর্জন দিই অনায়াসে
অপরাধ রাজ‍্যে মাথা চাড়া দেয় জৈবনিক অভ‍্যাস
সতর্ক বানীর শেকড় কেটে দিই
মায়াময় পৃথিবীর অলীক উপলব্ধিতে ধর্ষিত হয় সকাল

ব‍্যবসার হাটে মরে যায় ভ্রূণের শিকড়
অপারেশন টেবিলে আর্তমূখ দেখে না ডাক্তার
টাকার নদীতে মানবিকতা হাবুডুবু খায়
মাকড়সার জালে আটকে যায় দ্রোহহীন পরিচয়

অস্বীকৃতির কবজ পড়ে বিভাজন টানা হয় পৃথিবীর আঙিনায়
রাষ্ট্রের শ্লীলতাহানি হানি করি নির্দিধায়
জাগতিক সুখে যোনি পূজা করি অবলীলায়
অসহায় স্বপ্নেরা অবিশ্বাসের সীমানায় ঢুকলে বাস্তুহারা হয় স্বপ্নের কড়চা

ছায়া বৈচিত্রে ঢুকে পড়ে ধ্বংসের আগুন
পুড়ে মরে অসহ্য আহ্লাদ লটাপটি করে ঋতুবতী সময়
প্রাত‍্যহিক জীবনে আঁকা হয় সন্দেহ তত্বের প্রচ্ছদ

চেনা গান অচেনা সুর

প্রত্যেক ক্ষণ বেসেছি ভালো
শব্দ মুখর করে চেয়েছি রাখতে
কর্মঠ করার আপোষহীন সংগ্রামে
জড়িয়েছি নিজেকে
সাহারার বুকে প্লাবন আনার দৃঢ় সংকল্পে বিভোর

আজ দিগভ্রান্ত নাবিকের মতো
লাঠি হাতে ঠকঠক
টালমাটাল পায়ে জীর্ণ প্রেমিক
রোগে শোকে ভ্রান্ত
চোখে লেপ্টে আছে কুয়াশা
মুখে দুর্গন্ধ.পিচুটি ভরা চোখ
চোয়ালে নেই একটিও দাঁত

চেনা বন্ধুদের দাঁত থেকে ঠিকরে উঠছে হাসি
চেনা গানের মতো বাজছে অপমান

দুপুর গড়িয়ে নামছে বিকেল
সাঁঝ ছুটে আসছে রাতকে চুমু খাবে বলে

বেপরোয়া

বীজাণুর মতো ছড়াচ্ছে শ্রমিকের প্রত্যাশা
বর্ষার মাটি চষার গন্ধে ম.ম.করছে মাঠ
লাঙলের ফলায় ভেঙে যাচ্ছে কেঁচোদের বাসভূমি

হিংস্র বাজপাখির মতো নেমে আসছে অন্ধকার
রহস্য সিন্দুকে ভরা থাকছে কামনা
প্রেমের বীজগুলো নষ্ট বীজের তকমা পেয়ে গেছে

পরিত্যক্ত উঠোনে অনুতাপ বলে কিছু নেই

সময়ের হাত ধরে

সময়ের হাত ধরে তীর্থের কাকেরা সাজায় অচেনার ইতিবৃত্ত
ছায়াঘেরা ক্ষয়িষ্ণু দিনে আঁকা হয় ব্যথা রঙের বিষাদ
হলুদ পৃষ্ঠায় আঁকা আত্মার দহন
জল রঙের আর্তনাদে ভাসে শূন্যতার বালিয়াড়ি

স্নায়ুকোষ জুড়ে জমা হয় বিন্দু বিন্দু ঘাম
নিঃসঙ্গ নৌকায় সাজানো আছে আত্মঘাতী ভাস্কর্য
অবজ্ঞার অন্তরালে ছিঁড়ে যায় সম্পর্কের সুতো

অবজ্ঞার অন্তরালে চাপা পড়ে সম্পর্কের উঠোন
মেঘেদের জলসায় আহত হয় ধুলোবীজ
থমকে দাঁড়ায় পরকীয়া পৃথিবী

বিচিত্র বিশ্বাস

ক্রূরতা চরিতার্থ করতে অসংখ্য হাত জড়ো হয়
উল্লাসের সীমানায় ক্রুর হাসি হাসে নারদ

আজও নরবলি হয় ব্রিজ মজবুত হবে বলে
রেস্তরায় মিলে কচি মনুষ্য বাচ্চার স্যুপ
এপাড়ায় বেপাড়ায় বসে মধুচক্রের আসর
বিদ্রোহীর মিছিলে পুলিশ বেপরোয়া চালায় গুলি

নারীর নরম অংশে আঁকে আগুনের উল্কি

লৌকিকতার দোহায় দিয়ে তৈরী হয় গোসাঁয়, সতী

রতি পতাকা ওড়ে
আবেদন নিবেদন পুড়ে মরে বিশ্বাসের ঠিকানায়

ভালোবাসার গল্প

ভাঙা ডাঙ্গায় লেপ্টে আছে অজ্ঞাতবাসের গল্প
ঘাতক বসে আছে চুপটি মেরে

মাকড়সার জালে আটকে গেছে প্রজাপতি
আর্তনাদের ফোয়ারায় রঙ্গভূমি উত্তাল

আততায়ীর সাম্রাজ্যে তখন খুশির জোয়ার
শরীর নিংড়ে রেখে যাবো অসংরক্ষিত দিন
চাঁদ হীন রাত
অলীক সর্বনাশ ডানা মেলে
চাঁদ কাঁদে গোপনে
ঝরে পড়ে নিঃস্বার্থ বৃষ্টি

ভাষা বদলে যায়
নাটকীয় কথারা মোচড় দেয়
উজান বেয়ে ধেয়ে আসে ভালোবাসা
রক্তের সন্নিহিত স্রোতে জমে ওঠে হার্দিক সমারোহ

প্রদর্শনী

বাঁচা নিয়েই রোজনামচার সাতকাহন
খসে পড়ে পলেস্তারা
শূন্যের গভীরে জমে মেঘ
বজ্রের সাথে.,ঝড়ের সাথে গড়ে ভালোবাসার
ইমারত
মোহ বিলাসী আত্মার নিঝুম অহংকার
চাঁদনীর মোহময় প্রগল্ভতায় হয় রঙীন
ঘটে আস্থার অব মূল্যায়ন

ইতিহাস খুঁজে খুঁজে বের করি বিষাক্ত শব্দ
ঐ শব্দগুলো নিরুদ্বেগে হেঁটে যায় আগুনের দিকে

বেঁচে থাকা মানেই একঘর মানুষের সাথে আপোস
করা
আর আপোস করা মানেই অবলুপ্ত হয়
বিবেকের কণ্ঠস্বর
চলে স্যাঁতসেঁতে ভাবনার প্রদর্শনী

শিকড়

আত্মার গভীরে নেমে যেতে চাই শিকড়
আত্মিক প্রেমে মগ্ন উৎসবের বিষাদ কলস
হয়তো বা গোঁড়া কেটে ডগায় জল ঢালার আয়োজন
নিয়ত পরভুক আলোকলতা ঝিলিক মারে
সামন্ত শাসন জাঁকিয়ে বসেছে স্বপ্নের দুয়ারে
খাক্ হয়ে যায় অন্তর

বিভেদকামী সূর্য ঢলে পড়ে পশ্চিমে পরজীবী আহ্লাদে ভেসে চলেছে সর্বনাশ

ঈশ্বর নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে
হয় ঈশ্বর মরে গেছে
না হয় চলৎশক্তিহীন
হারিয়েছে নিয়ন্ত্রণ
ইতিহাসের পাতা এমনি করেই ভরাট হয়
পৃথিবী পৃষ্ঠায় লেগে আছে জন্মদাগ
প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেখুক নিত‍্য নতুন গবেষণা
দড়ি টানাটানির আদিম কথা
শতাব্দীর ফসিলের লেগে আছে ঈশ্বরের ঘ্রাণ
সন্দেহের বশে সৃষ্টি কর্তার অমূলক মুন্ডুচ্ছেদ করি

অভিশপ্ত আত্মা সম্পর্কহীন পথে মুখ ঘষা খায়
অতৃপ্ত আবেদন হাহাকারে মগ্ন
আত্মা কেনাবেচা হয় মিথ্যে যাপনের হাটে
মূলত্রাণ মুচড়ে যায়
শিকড়ের বিষণ্ণতা অতৃপ্তির ঠোঁটে বন্দী

ভাঙা সিঁড়ির শরীর বেয়ে নেমে আসে অস্তিত্বের ফোঁটা ফোঁটা দীর্ঘশ্বাস

চাঁদ সওদাগর এবং

লোনা সময়, তরী ডুবে যাচ্ছে সমুদ্রে
সীমাহীন ঔদ্ধত টালমাটাল
অসমর্থিত অস্তিত্ব ভেঙে পড়ছে ক্রমশঃ

অস্তিত্বের স্বরলিপি কেড়ে নিচ্ছে মনসা
প্রেমের প্রশ্রয় পেতে প্রযুক্তিগত প্রকৌশল প্রস্তুত
বাতাসে মিশে যায় লবণাক্ত নিঃশ্বাস
একটু একটু করে লুণ্ঠিত হচ্ছে বিনিদ্র অস্তিত্ব

অস্তিত্বের লড়াই চলছে বিনম্র রজনী তে
সন্তান সন্ততি আজ জটিল আবর্তে মুহ্যমান
দৃঢ়চেতা চাঁদ সওদাগরের আকাশে নেমে আসছে অমাবস্যা

জটিল অস্তিত্বের সংবেদনশীল ঘুমের নাম সাদা মেঘ
অনবদ্য আক্রোশে ঢেলে দেয় সংবেদনশীল বিষ
একমুঠো পূজা পেতে অসম লড়াইয়ের মাঠে বুনে দিলাম আক্রোশ

উত্তরাধিকার

শূন্য হৃদয় প্রশ্ন করে বারবার
তুমি আছো না নেই?
খন্ড খন্ড সময় পেঁয়াজের খোসার মতো ওড়ে,
দীর্ঘশ্বাস হামাগুড়ি দেয়
এক সমুদ্র দৃষ্টি নিয়ে ঘর করে নীরবতা

তোলপাড় হৃদয় বাসা বুনছে জীবন মৃত্যুর ওপারে
টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া বেঁধে নিয়েছি খোঁপায় স্বপ্নের দেশে পাখা মেলতে ভয় নেই
নিঃশব্দ চাঁদ ভিজে আছে ।
দেখছে বিহ্বলতা কাকে বলে?

কালো মেঘের অন্তরালে মেখে নিবো সুস্থ জীবনের নিভৃত উচ্ছ্বাস
এভাবেই অনন্তকাল পথ চেয়ে থাকতে আমার কোন দ্বিধা নেই
আমি কেবল রেখে যেতে চাই আমার উত্তরাধিকার

অরণ্য কথা

সবুজ অরণ্যে চিতল হরিণ আনন্দে আত্মহারা
আচমকা বাঘ কামড়ে ধরে ঘাড়

সাফারিতে মত্ত বেগবান উল্লাস ক্যামেরাবন্দী হয়
ছিন্ন ভিন্ন হয় শরীর
আর্তনাদে বাতাস ভারী হলে
নিস্তব্ধতা নেমে আসে শরীরে

কাগজ ওয়ালারা আসে
ভিন্ন ভিন্ন আ্যঙ্গেলে ছবির হয় পটাপট
খবরের শিরোনাম জুড়ে লেখা হয় নিস্তব্ধ আর্তনাদ

পাটির বাবুরা আসে
বেলফুল দিয়ে সাজায় মিছিলের কর্মসূচি
শ্লোগানে শ্লোগানে কেঁপে ওঠে মহল্লার কুমারী অন্তর

হঠাৎ একদিন কাগজ ওয়ালারা প্রথম পৃষ্ঠায় ছেপে দেয় হরিণটাই নাকি বাঘের খাদ্য হতেই এসেছিল
ওরা না কি খাদ্য হতে খুব ভালোবাসে

আক্ষেপ

খাঁ খাঁ প্রহর
গরিব মসজিদ গুনছে প্রহর
বিচিত্র সব মানুষেরা দূষিত করছে মানচিত্রের আঁকাবাঁকা নদী
কালের করাতে খণ্ডিত হচ্ছে বিদ্রোহের মানবিক গীতিময়তা
গামছা গায়ে ত্রস্ত মোয়াজ্জীন হাঁকছে আজান
চায়ের দোকানে আড্ডায় মশগুল সব মুসল্লি
পাল্টে দিচ্ছে ইসলামী সংবিধান
বানোয়াটি ধর্মের অর্থহীন কিছু আশ্রয়
মাথা তুলেছে
বিবেকের অশ্রুভেজা আক্ষেপ সূর্যের গায়ে আলপনা আঁকে

জিজ্ঞাসা

বাস্তবের আয়নায় ধরা পড়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের শূন্যতা
আত্মারা ভ্রান্তির আশকারায় গায়ে হলুদ মাখে
ভেজা কাহিনীগুলো সমৃদ্ধির ছায়া পেতে মরিয়া

আমাদের বিশ্বাস গুলো এভাবেই শতকের পর শতক পার হবে
জাগরণের সীমানায় খুঁজে পাই ভাষাহীন অনুভূতি দাহহীন শব

নাগরিক বৃক্ষ

দেহের সমস্ত আসবাব সক্রিয় হলে বৃষ্টির বারান্দায় ভেসে যায় স্বপ্ন
পৌরুষত্বের অকলঙ্কিত মৈথুন বিভ্রাটে নামে প্লাবন
যুবতী মেয়েরা স্বপ্নের বারান্দায় চুরি করে ব্যাকরণ
গোপন ক্ষতের ওড়না সরায় ভ্রমণ ক্লান্ত নাগরিক

বটবৃক্ষের তলায় যৌনদাসী রতিবাজারের গল্প শোনায়
আত্মমগ্ন ঘাতক শীর্ণ বর্ণের রমণ রসে জারিত করে পৃষ্ঠা ভর্তি উপপাদ্য
ভেসে যায় শূন্যতার প্রসন্ন উল্লাস

নাগরিক বৃক্ষ থেকে খসে পড়ে জীবনবোধের মানবিক পলেস্তারা
ব্যথার পিয়ালায় চুমুক লাগায় যৌনদাসীর স্বর্গারোহণের বিয়োগান্তক উপন্যাস

নির্বোধ

আদি মানবের রক্তে লেখা কামইন্দ্রিয়ের কবিতা
এই ভাষাগুলোকেই লোকে ভালোবাসা বলে
ভালোবাসা নিংড়ানো রসে হাবুডুবু খায় কামগন্ধ ব‍্যাকরণ

নির্বোধ অমাবস্যায় উপোস করে সূর্য
হৃদয় খুঁড়ে তুলে আনে সর্বনাশ

প্রেমের সমুদ্র উথাল পাথাল হলে মানুষ বোকা বনে যায়
হারিয়ে ফ্যালে ঠিকানা
উত্তাল সমুদ্রে হাবুডুবু খায় পুনর্জন্ম

বিষন্ন ছাতার তলে ঢুকে পড়ে কাম আর আর্তনাদ

অনাহুত

আয়োজন লেখা আছে প্রকৃতি জুড়ে
এক একটা সময় চেনা পথ ও অচেনা হয়
অব‍্যক্ত কথা আঁকা হয় অমসৃণ দেওয়ালে

লাল সংকেত ভেঙে প্রেম ডানা মেলে
নিপুণ হাতের ছবিও বুঝে গ‍্যাছে সময়ের ব‍্যবধান
ভাদরের ভরা গাঙে নিশ্চুপ গল্পেরা সাজায়
অক্ষর আর ঝরা পাতাদের আয়ু দিয়ে যুবতী সাজায় অনাহুত জলসা ঘর

অনাদরে জাদুঘর জুড়ে অসংলগ্ন ঘুম
দ্রুত অক্সিজেন কমে আসে
হয়তো বা পৃথিবীর আয়ু কমে আসছে

অসতর্ক মুহূর্তে উড়ে আসে বিচ্ছেদ
ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়ে বিশ্বাসের সেতু

শূন্যতার চাদরে বাঁধা আহ্লাদ মেখে ঈশ্বর মুচকি হাসে

মৃত মানুষ গুলোর পিঠে এখনও চাবুক পড়ে
তবুও ওরা ছুটে চলেছে ঈশ্বরের দিকে
নক্ষত্রেরা দেখছে সভ্য মানুষের ধাবমান ঐতিহ্য

তাদের রক্তাক্ত আঘাত লুকিয়ে রাখছে পেটের ভিতর
ক্ষুধার আঘাত খেয়ে খেয়ে ওরা অভ্যস্ত
সংসারের লোনা জলে চুবিয়ে নেয় শরীর

শূন্যতার চাদরে বেঁধে নেয় অজস্র আহ্লাদ

হাড় জিরজিরে গাছগুলো জাঁকজমকপূর্ণ তীক্ষ্ণ মৃত্যুর গল্প শোনায়
পূজার থালায় সভ্য মানুষ জাঁকজমকপূর্ণ নৈবেদ্য সাজায়

পাতকুড়োনীর দল খাবারের ঠোঙা চাটে তৃপ্তি করে
কুকুরের সাথে পাতায় বন্ধুত্ব
রাত বাড়লে এক বিছানায় গুড়িমুড়ি করে নিদ পাড়ে

বরফের শূন্যতা নিয়ে মৃত মানুষগুলো দ্যাখে পাহাড়ের পেট চিরে আসা ঝর্ণাধারা শুকিয়ে গেছে,
খাঁ খাঁ দুপুর

জীবন্ত মানুষের দল – সংবিধান মেনে দিতে হবে দিতে হবে বলে গলা ফাটায়
চাবুক খাওয়া মানুষগুলো শূন্যতার চাদরে বাঁধা আহ্লাদ নিয়ে কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে

ঈশ্বর মুচকি হাসে

নিরিবিলি জীবন

আবেগ তালি দিলে মিথ্যের দেশে বিচরণ করি
সংসারের নির্ঘুম বিছানায় অবিশ্বাসের ব্যাকরণ ডানা মেলে
বিশ্বাসের পথে ধূলাময় আকাঙ্খার গান

অন্ধকারের তাঁবুর ভিতর আঁকি বিষাদের ছবি
আদিম বিনয়ে ভেসে যায় বিষন্ন মাঠ
সংযমের বাঁধ ভাঙে
পরাজিত আহ্লাদ মেখে বিদ্রুপের ধ্বনি হুংকার ছাড়ে
বিষন্ন মাঠে ডেকে ওঠে শেয়াল

কষ্ট গুলো আন্দোলিত হয়
ব্যাকুলতা বারবার ঠেকে ওঠে
কোলাহল জেগে ওঠে সঙ্গমের পাড়ায়

নিরিবিলি জীবন ভেসে যায় অবিশ্বাসের প্লাবনে

প্রশ্রয়

নেতার জুতা পালিশ করে আই এ এস অফিসার
গণতন্ত্রের দেশে রাষ্ট্রহীন স্বাধীনতা
পৃথিবীর মানচিত্রে আঁকা হচ্ছে অশ্লীল অন্ধকার

কুখ্যাত সময়
শহরের মুখে চুমু খাচ্ছে সভ‍্যতার সাপ
জাতীয়তাবাদ ঢলে পড়ছে ধর্মের কোলে
চাউর হয় মরুযাপনের উৎসব কথা
নদী পথ আগলে বসে আছে সর্বনাশ

জাতীয় দুঃখে পলেস্তারা লাগায় বিগ্রহের চাঁদ
ভ্রান্ত আশ্বাসে ভিজে কৌশলী প্রশ্রয়
বৈশ্যতার ধূম্রজালে ঝাপসা হয় স্বাধীনতার আ‍্যলবাম
নেতাজী, গান্ধীজী, বিবেকানন্দ গড়াগড়ি যায়
ভাবনার প্লাবনে ভাসে নিরুত্তাপ ভ্রষ্টাচার

স্বাধীনতার পতাকায় উড়িয়ে দিলাম গার্হস্থ্য দুঃখ আর তেতো রঙের ধর্ম বিষাদ

অভিমান ও ছেলেবেলা

খেলার মাঠে ঢুকে পড়ছে শব্দহীন পাঠশালা
নিস্তব্ধ অন্ধকার নেমে আসে দিগন্তের মাঠে
রেললাইনের ধারে পড়ে আছে মন খারাপ নির্জন সন্ধ্যায় ভ্রান্তির আয়ু মোমবাতির কারখানায় বন্দি

সূর্যের রোদ থেকে খসে পড়ার সময় নাগরিক শূন্যতা লিখে রাখে নক্ষত্রের ডায়েরি
অবকাশ যাপনেও ল্যাপটপ সঙ্গী হয় ভদ্রস্থ বারান্দায় স্ট্যাটাস ডানা মেললে সব ব্যর্থতা লুকিয়ে রাখি সাদা চুলের অ্যালবামে

ভরদুপুরে বাবুদের বাগানে যোগানদার তাড়া দেয়
নুন লঙ্কা দিয়ে কাঁচা আম শ্রাদ্ধ করি
পুকুরের স্নানে উঠে আসে ছোটবেলার উপন্যাস
নাগরিক যন্ত্রণা ভাষা পাই
লিখে রাখি মন খারাপের কীর্তন গান মাটির বাড়ির সদর দরজায় চেনা কণ্ঠস্বর অচেনা হয়
মৃত মানুষগুলোর কাছে ডেকে ডেকে গল্প শোনায় নবান্ন আর ঈদের
কোলাকুলি ইতিহাস এখন রাম রহিমের বারান্দায় যুদ্ধ করে

ক্লাস ভর্তি ফ্যাশনের রোদ্দুর উঁকি মারে চোখ ঝলসে যায়
দেখি অযোগ্যতায় ভরা বিভ্রান্তিমূলক সহবাস
খেলার মাঠে জমে উঠে খেলা
মায়েদের বিংলিশ ভাবনায়
অন্ধকার নেমে আসে আমাদের পাঠশালায়
নব প্রজন্ম উদযাপন করে মৃত্যুর ক্লান্তিহীন উদ্ভাস
শূন্যতা ডুবে যায় শূন্যের অভিঘাতে

ইতিহাস

পাথরে টক্কর খায় ধর্ষণাক্লান্ত মেয়ের আর্তচিৎকার
তাঁর চোখে ও স্বপ্ন ছিল ভালো সেবা দেওয়ার
অচেনা স্টেশনে নেমে গেছে স্বপ্ন
অসহায় চাঁদ ডুবে গেছে বিশ্রামাগারে

যোনি ফেটে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত
বিকৃত যৌনাচারে মত্ত পুরুষ ছিঁড়ছে মাতৃ -জঠর

বিষাদ শহর গুনছে বিষাদ প্রহর

বিষাদ আত্মার নিচে ঘুমিয়ে আছে দুস্থ সমাজ
একাকীত্বের জানালায় আছড়ে পড়ে কান্নার ঢেউ
ধারালো হিংসা গুলো রচনা করছে, অন্ধকারের ইতিহাস

বিবস্ত্র

আত্মাহীন শহরে বর্ণহীন চলাফেরা
মৃত্যুর এখানে তেমন গুরুত্ব নেই
এমন মিছিল হামেশাই দু-দশটা মৃতদেহ প্রসব করে
ব্যাকরণহীন জীবনে কোণঠাসা সব নির্বাসন
প্রতিদিন বিবস্ত্র হয় বিবেক

আয়নার ভিতর নৃত্য করে জল্লাদ
থ্যাঁতলানো চাঁদের শরীরে ডুগডুগি বাজায় বিবস্ত্র-একুশ
বেঁচে থাকাগুলো ধর্ষিত হলে
অন্তহীন আর্ত চিৎকার লিখে রাখে নপুংসকের দল

রক্ত ভেজা পথে হাঁটে দালালের লালসা
দ্রাঘিমা রেখার ওপারে শুধু হাহাকারের কোলাহল
শেষ লগ্নে বেজে ওঠে ঘৃণার অর্কেস্ট্রা
সুর মিশে অকাতর অন্ধকারে
সব পথেরা নিভিয়ে দিচ্ছে আলো

অসুস্থ ক্যালেন্ডার

মুখ আছে কথা নেই
ভাবছেন !
না !
কেউ আমরা বোবা নই

বেলা বাড়লে বনে যায় অলৌকিক শব
সব মৃতেরা আমার আত্মীয় প্রাগৈতিহাসিক বাজারে অভাবী ভূগোলের রাজ্যপাট

জেলিফিস চলনে থাবা বসায় সামঞ্জস্যহীন অন্ধকার
ছিঁড়ে গেছে বিশ্বাসের সুতো
মেরুদণ্ড ভেঙে নিয়েছি বহু দিন

শুরু হয় চেতনার শ্বাসকষ্ট

বাসের জানালা থেকে হারিয়ে যায় স্টপেজ
কীর্তনের মঞ্চ জুড়ে অন্ধকারের দুষ্ট ক্ষেত
উল্টে গেছে মানবিকতার কচ্ছপ
অসুস্থ ক্যালেন্ডার সাজিয়ে স্বপ্ন আঁকছে ভবিষ্যৎ

অস্পষ্ট

দায়িত্বজ্ঞানহীন অস্পষ্ট সন্ধ্যা উঁকি মারে
জাগতিক বিশ্বাসের সমান্তরাল নির্জন পথ
সময়ের জলছবি ভেসে ওঠে অসত্য উচ্চারণে

সংবিধানের অসুখ হলে অসংযমী দিন ডানা মেলে
প্রজাতন্ত্রের ঢেউ ওঠে আদিবাসী পাড়ায়

হারানো বিবেকের মাঠে মূল্যবোধের নিদাঘ আঁকা
সময়ের স্রোতে ভাসে শান্তির লালিত বাণী
বিপর্যস্ত বিবেকের আকুতি ঝরে দিব্য জ্ঞানের মাঠে
দীর্ঘশ্বাসের আগুনে ঝলসে ওঠে বিশ্বাসের ঘর

নীরব পাঠ – আবদুস সালাম
নীরবতার তালিম নিই রোজ
চিৎকার বুকে নিয়ে যায় হাসপাতালে
নকল ঈশ্বর আসেন
উদাসীন বারান্দায় কেঁপে ওঠে হৃদয়ের জানালা

বসে নীরব পাঠের আসর
নদীর পথভ্রষ্টতা ঘিরে বেজে ওঠে আতঙ্ক-নূপুর
সভ্য মানুষেরা বয়ান করে নীরবতার মাহাত্ম্য

রাস্তা পার হই সন্তর্পণে
জীবন মরণের উচ্ছ্বাস আসে তেড়ে কোলাহল জর্জরিত মধু চেটে নেয় অসহায়
পুড়ে মরে প্রজাপতি
ঋতু পরিবর্তনের নীরব পাঠ শোনায় ধর্মগুরু।

আবদুস সালাম | Abdus Salam

Adonis | অ্যাডোনিসঃ আধুনিক আরবি কবিতার রূপকার | 2023 Article

Bishnupur Fair | ফিরে দেখা – বিষ্ণুপুর মেলা (১৯৮৮-২০২১)

Mahagai | মহাগাই – শওকত নূর | 2023

Salt Water | নোনা জল – জয়নাল আবেদিন | 2023

Shabdodweep Web Magazine | Bengali Poetry Forms | Abdus Salam

Bengali poetry forms are a vital part of Bengali literature and culture. Rooted in tradition, enriched by history, and elevated by countless poets, Bengali poetry forms have evolved through the centuries to encompass both classical and modern styles. From the lyrical expressions of Rabindranath Tagore to the bold voices of modern Bengali poets, Bengali poetry continues to enchant readers.

Shabdodweep Web Magazine proudly celebrates this tradition by publishing a wide variety of Bengali poetry, including contemporary works by new voices and timeless pieces by established writers.

What are Bengali Poetry Forms?

Bengali poetry forms are distinct styles and structures used in writing Bangla poems. These poetic forms reflect the deep emotional and cultural roots of Bengal. Traditional Bengali poetry often follows fixed meter and rhyme, while modern Bengali poetry breaks conventional boundaries.

Some of the most popular Bengali poetry forms include:

Panchali – Narrative poetry, often based on mythological or historical tales.

Baul Songs – Spiritual and philosophical songs by mystic minstrels.

Kirtan – Devotional poetry focused on Lord Krishna, sung with music.

Jhumur – Folk poetry of rural Bengal, often performed in groups.

Adhunik Kobita (Modern Poems) – Free verse that focuses on individual expression and social themes.

Each of these Bengali poetry forms has played a key role in shaping Bengali literature. Writers like Kazi Nazrul Islam, Rabindranath Tagore, and Jibanananda Das have experimented with and contributed immensely to these styles.

Evolution of Bengali Poetry Forms

The journey of Bengali poetry forms spans centuries. In ancient times, Bengali poetry had a strong influence from Sanskrit literature.

During the Bengal Renaissance in the 19th century, poets like Michael Madhusudan Dutt and Rabindranath Tagore revolutionized Bengali poetry forms by introducing Western poetic ideas. Tagore’s “Gitanjali,” which won the Nobel Prize, is a perfect example of blending classical Bengali poetry with modern thought.

In the 20th century, modern Bengali poets brought in free verse, breaking away from rigid meter and rhyme. This gave birth to more personal and socially conscious poetry, which still dominates Bengali literature today.

Shabdodweep and Its Contribution to Bengali Poetry Forms

At Shabdodweep Web Magazine, we take pride in nurturing the legacy of Bengali poetry forms. We provide a platform for emerging and established poets to publish their Bangla poems. Whether it’s romantic verses, political commentary, or spiritual reflections, we embrace all shades of poetry.

Our contributor Abdus Salam has written numerous stories and poems for Shabdodweep. His work reflects deep insight into Bengali literature and a passion for preserving its traditions. Readers frequently appreciate his storytelling style and authentic voice.

By publishing diverse forms of Bengali poetry, Shabdodweep Web Magazine serves as a cultural bridge between generations. We keep our language rooted in tradition while also embracing new literary trends.

Why Bengali Poetry Forms Still Matter

Bengali poetry forms are not just about aesthetics; they are a way of life. They connect readers to their roots, make them think, and help them express emotions that are hard to put into prose. Bangla poems often explore themes of love, loss, nature, revolution, and spirituality.

With the world becoming more digital, online platforms like Shabdodweep Web Magazine are essential in keeping Bengali literature alive. We publish poetry in various forms so that readers across the world can enjoy the richness of Bengali poetry.

Many famous Bengali poetry pieces still remain popular today. Works by Rabindranath Tagore, Kazi Nazrul Islam, and Jibanananda Das are timeless and continue to inspire poets globally.

Modern Bengali poets are also experimenting with spoken word, multimedia poetry, and social media publishing. At Shabdodweep, we adapt to these changes while maintaining the essence of Bengali poetry forms.

We also host poetry contests, publish theme-based issues, and feature curated collections that explore various Bengali poetry forms, making our magazine a must-visit for poetry lovers.

Conclusion

Bengali poetry forms are a precious gem in the world of literature. Whether you’re a seasoned poetry lover or just starting to explore Bangla poems, there’s something deeply moving and universally relatable in these verses.

At Shabdodweep Web Magazine, we invite you to immerse yourself in the world of Bengali poetry. Discover timeless classics, explore modern voices, and enjoy the unique rhythm of Bengal’s poetic heritage. Join our community, read works by poets like Abdus Salam, and be part of the continuing legacy of Bengali poetry forms.

Frequently Asked Questions (FAQs) about Bengali Poetry Forms

What are Bengali poetry forms?

Bengali poetry forms refer to the traditional and modern styles used in Bangla poem writing. These include Panchali, Baul songs, Kirtan, and modern free verse poetry. At Shabdodweep Web Magazine, we publish a variety of these forms to preserve and promote Bengali literature.

Where can I read Bengali poetry forms online?

You can read a wide range of Bengali poetry forms on Shabdodweep Web Magazine. We feature poems from both new and established Bengali poets, including works by Abdus Salam.

Who are some modern Bengali poets published on Shabdodweep?

Shabdodweep publishes works from many modern Bengali poets. One of our most featured writers is Abdus Salam, whose stories and Bangla poems are popular among our readers.

How does Shabdodweep Web Magazine support Bengali literature?

Shabdodweep Web Magazine provides a digital platform for poets and writers to publish their works. We focus on Bengali poetry forms and aim to connect readers with the rich tradition of Bengali literature.

Can I submit my Bangla poem to Shabdodweep?

Yes! We encourage budding poets to submit their Bangla poems. We accept various Bengali poetry forms and provide guidance for improvement. Join our literary family today!


Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment